ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির স্ত্রী সালমা আনসারি। ছবি: সংগৃহীত।
আরও একটা কণ্ঠস্বর যোগ হল ‘তিন তালাক’ বিরোধী কোরাসে। গুনতিতে একটাই হয়তো, কিন্তু গুরুত্বে সে বিরাট। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির স্ত্রী সালমা আনসারি এ বার মুখ খুললেন এ দেশে প্রচলিত ইসলামি বিবাহ বিচ্ছেদ রীতির বিরুদ্ধে। ধর্মগ্রন্থের কোনও ছত্রে এ হেন বিচ্ছেদ রীতির উল্লেখ নেই বলে জানালেন সালমা। মৌলানা-মৌলবির কথায় নয়, শুধুমাত্র কোরানে বিশ্বাস রাখার পরামর্শ দিলেন তিনি মুসলিম নারীদের।
বিতর্ক এখন দেশজোড়া। তিন তালাক বৈধ হতে পারে কি না, তা নিয়ে তুমুল বাগ্যুদ্ধ। বিতর্ক হালের নয়, বহু বহু কালের। কিন্তু পরিস্থিতিটা একেবারে নতুন। স্বাধীনতার প্রায় সাত দশক পর দেশের সর্বোচ্চ আদালত তিন তালাক প্রথার বৈধতা বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিতর্কের প্রাবল্য তাই তুঙ্গস্পর্শী আজ। কেউ ধর্মাচরণে অযাচিত হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় মুখর। কেউ নারীর মর্যাদা এবং সমানাধিকারের সমর্থনে সরব। কেউ সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষার প্রশ্নকে বড় করে দেখতে চান। কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানসে প্রভাব ফেলতে উদগ্রীব। আদালতের রায় কী হবে, কার পক্ষে যাবে, কাকে আশাহত করবে, সে নিয়ে মন্তব্য করার সময় তো আসেইনি, সে মন্তব্য প্রয়োজনীয়ও নয়। তাৎপর্যপূর্ণ নতুন নতুন প্রেক্ষিতগুলোর উন্মোচন। যুক্তি আসছে, কুযুক্তিও আসছে, আর তাদের হাত ধরে রোজ নতুন নতুন সামাজিক প্রেক্ষিত সামনে আসছে। ধর্মাচরণ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজ, সমাজে নারীর অবস্থান ইত্যাদিকে আমরা কে কেমন চোখে দেখি, সে সব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর এই ধুন্ধুমারের মাঝে আরও কিছু মানুষের সুচিন্তিত মতামতের মতো সালমা আনসারির মন্তব্যটাও অন্যতম এক নিশানদিহি স্মম্ভ হয়ে দেখা দিচ্ছে।
সালমা আনসারি মুখ খুলেছেন, তিন তালাকের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। তাঁর এই মতামত দু’টি অবস্থান থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, তিনি মুসলিম নারী। দ্বিতীয়ত, তিনি ভারতের উপরাষ্ট্রপতির স্ত্রী। তিন তালাক প্রসঙ্গে মুসলিম নারী কী ভাবছেন, তা এই বিতর্কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিতর্কে ভারতীয় রাষ্ট্রের শীর্ষ বৃত্তগুলো কী অবস্থান নিচ্ছে, সে-ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সালমা আনসারি সেই দুই বৃত্তেরই প্রতিনিধি। তাঁর বার্তা যে এক সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা যোগ করে দিল এ টানাপড়েনে, সে নিয়ে সংশয় থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy