Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জট এত জটিল হয়ে উঠবে কেন!

বুধবার দুপুর থেকে সাসপেনশন তোলার দাবিতে উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন পড়ুয়ারা। তাঁদের এই আচরণকে ব্ল্যাকমেলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তিনি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৩
Share: Save:

দিনের শুরুতে হোক বা শেষে, যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই সর্বাগ্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন অগ্রাধিকার। সুতরাং এমন কোনও অচলাবস্থাকাম্য নয় যাতে পঠনপাঠন দিনের পর দিন ব্যাহত হয়। কর্তৃপক্ষের জেদ বা পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া, কোনওটাই এমন কোনও পর্যায়ে পৌঁ‌ছনো উচিত নয়, যাতে পঠনপাঠনে স্বাভাবিকতা ফেরানোর সমাধানসূত্র খুঁজে বার করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে চলতে থাকা অচলাবস্থা কাটল। তিন ছাত্রের সাসপেনশন প্রত্যাহার করে নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, উঠে গেল ঘেরাও-ও। কিন্তু যে পরিস্থিতি প্রেসিডেন্সিতে তৈরি হয়েছিল, তা এই গত কয়েকটা দিনের বিষয় নয়। হিন্দু হস্টেলের মেরামতির কাজ দ্রুত শেষ করে তা অবিলম্বে পড়ুয়াদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই দফায় দফায় উত্তপ্ত ছিল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। দফায় দফায় ঘেরাও হয়েছে, স্লোগান উঠেছে, বিক্ষোভ চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সমাবর্তনের আয়োজন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছেন। তা নিয়ে ফের সংঘাত শুরু হয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় তিন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ কার্যকর হতেই ফের এক নাগাড়ে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। অচলাবস্থা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছনোর পরে জট কাটল। শাস্তি প্রত্যাহৃত হল, উপাচার্য ঘেরাওমুক্ত হলেন।

প্রশ্ন হল, এত দিন ধরে কোনও জট বহাল থাকবে কেন? যে কোনও বিক্ষোভ এমন চূড়ান্ত টানাপড়েনের রূপ নেবে কেন?

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

হিন্দু হস্টেলের মেরামতিতে এত দীর্ঘ সময় কেন লাগবে, পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া জানা সত্ত্বেও দ্রুত কাজ শেষ করার বন্দোবস্ত কর্তৃপক্ষ করতে পারবেন না কেন, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর এখনও মেলেনি। পড়ুয়াদের ক্ষোভ অতএব অবান্তর নয়।

কিন্তু দাবিদাওয়ার যৌক্তিকতার কথা মাথায় রেখেও একটা প্রশ্ন পড়ুয়াদের উদ্দেশেও রাখতে হয়। ইতিবাচক ফল মেলার ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়েও বিক্ষোভকে এমন কোনও পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া কি উচিত হয়েছিল, যাতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘাত চরমে পৌঁছে যায়?

আরও পড়ুন: ঘেরাও উঠল প্রেসিডেন্সিতে, তুলে নেওয়া হল ৩ ছাত্রের সাসপেনশন

কোন পর্বে কতটা এগনো যায়, কোন পর্বে কিছুটা ধৈর্য দেখানো প্রয়োজন, ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকেও সে কথা বুঝতে হবে।

মোদ্দা কথা হল, যে কোনও পক্ষেরই লক্ষ্য হওয়া উচিত জট খোলা। জেদ বা একগুঁয়েমি দেখিয়ে পরিস্থিতিকে ক্রমশ জটিল করে তোলা কোনও পক্ষের কাছ থেকেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে যাঁরা রয়েছেন, অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেক বেশি ভরা তাঁদের। সুতরাং দায়টা কিন্তু কর্তৃপক্ষকে একটু হলেও বেশি নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE