এর আগে তৈরি হয়েছিল স্পর্শ মানচিত্র (ব্রেইল ম্যাপ)। এ বার বানানো হল স্পর্শযোগ্য চিত্র। যেখানে দৃষ্টিহীনরা ছুঁয়ে দেখার পাশাপাশি শুনতেও পারবেন। মূলত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য পাঠ্যক্রমের মধ্যে দিয়েই বিশেষ উদ্যোগ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের পড়ুয়াদের।
প্রতিষ্ঠান সূত্রের খবর, ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরে বিশেষ প্রজেক্ট থাকে ‘ডিজ়েবিলিটি ইন ইন্ডিয়ান লিটারেচার’ বিষয়ের উপর। যেখানে এর আগেও দু’হাজার স্ক্রু দিয়ে তৈরি হয়েছিল ব্রেইল ম্যাপ। এ ছাড়াও ২০২০ সালে তৈরি করা হয়েছিল ব্রেইল গ্রাফিটি। চলতি বছর ‘ডিজ়েবিলিটি ইন ইন্ডিয়ান লিটারেচার’ বিষয়ের প্রকল্পের মধ্যে দিয়েই পড়ুয়ারা দু’টি স্পর্শযোগ্য চিত্র তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন:
দু’টি ভাগে বিভক্ত ছিল স্নাতকোত্তর স্তরের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পড়ুয়ারা। কুলোর মধ্যে চাল, ডাল এবং ঘরোয়া নানা দ্রব্য দিয়ে বানানো হয় একটি ছবি। যে ছবি স্পর্শের মাধ্যমেই অনুভব করতে পারবেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা। অন্য ভাগের পড়ুয়ারা তৈরি করেছেন চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের ‘মা এবং সন্তান’ চিত্রের, যে মায়ের অবয়ব থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে একটি স্পর্শযোগ্য চিত্র। ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ইশান চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বাংলার তাঁত শিল্পের নানা দিক তুলে ধরে একটি কাপড়ের মধ্যে সেলাই করে একটি ছবি বানানো হয়েছে। সঙ্গে একটি মহিলার অবয়ব তৈরি করেছেন পড়ুয়ারা। ইশান বলেন, ‘‘যখন কেউ কাপড়টি ছুঁয়ে দেখবেন তাঁকে একটা অডিয়ো মেশিন দেওয়া হচ্ছে। যেটির সাহায্যে কাপড়ের যে অংশ স্পর্শ করা হবে তখন অথবা মহিলার ওই অবয়ব স্পর্শ করলে তার বিস্তারিত তথ্য শুনতে পারবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিষ্ঠান সব সময় চেষ্টা করে দৃষ্টিহীনদের প্রতিবন্ধকতাকে কিছুটা দূর করা। ক্লাসরুমের গণ্ডির বাইরে গিয়ে এমন প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে বৃহত্তর সমাজে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেন এই বিভাগের পড়ুয়ারা’’।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় তলাতেই রাখা হচ্ছে এই দু’টি চিত্র। পাঠ্যক্রমকে শুধু বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে ‘ডিজ়েবিলিটি ইন ইন্ডিয়ান লিটারেচার’-র মধ্যে দিয়ে প্রতিবন্ধীদের পাশে এ ভাবেই দাঁড়াতে চাইছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ।