Advertisement
E-Paper

পড়ুয়াদের ট্যাব কিনতে ১০ হাজার টাকা কেউ পেয়েছে, কারও ব্যাঙ্কে জমাই পড়েনি, প্রশ্নের মুখে শিক্ষা দফতর

রাজ্য সরকার এই প্রথম বার একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব বা মোবাইল ফোন কিনতে টাকা দিচ্ছে। আগে শুধুই দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের দেওয়া হত। এ বার টাকা দেওয়ার শুরুই হয় দেরিতে। কারও কারও ক্ষেত্রে আরও দেরি হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৩৫
All students of HS has yet not got money to purchase tab

—ফাইল ছবি।

প্রথমে ঠিক ছিল প্রতি বছরের মতো এ বারেও শিক্ষক দিবসের দিন ৫ সেপ্টেম্বর উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। শেষ বেলায় তা পিছিয়ে যায়। তবে পুজোর আগেই টাকা পাঠানো শুরু করে দেয় শিক্ষা দফতর। দীপাবলি এসে গেলেও বেশির ভাগ পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তা জমা পড়েনি। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠলেও শিক্ষা দফতরের বক্তব্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গোলমাল হয়ে থাকলেও তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঠিক হয়ে যাবে, সকলেই টাকা পাবে।

বিভিন্ন জেলা থেকেই এমন অভিযোগ এসেছে যে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় ট্যাব বা মোবাইল কেনার টাকা থেকে বঞ্চিত বৃত্তিমূলক শিক্ষার্থীরা। সরকারি পোর্টালে পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্ত না থাকার কারণেই এই জটিলতা বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজোর আগে রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী ট্যাব কেনার টাকা দিতে শুরু করে সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের। এ বারই প্রথম রাজ্য সরকার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে এই টাকা দিচ্ছে। যা বাজেট পেশের সময়েই রাজ্যের পক্ষে জানানো হয়েছিল। অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা না পৌঁছনো নিয়ে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “বৃত্তিমূলক শাখার পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা এখন‌ও আসেনি। বাংলা শিক্ষা পোর্টালে নাম নেই বলেই এই টাকা দেওয়া হচ্ছে না।”

শুধু বৃত্তিমূলক পড়ুয়ারাই নয়, বিভিন্ন জেলার কোথাও চার হাজার, কোথাও ছ’হাজার পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখন‌ও টাকা পৌঁছয়নি। তবে এই টাকা না পৌঁছনোর কারণ হিসাবে বিকাশ ভবনের দাবি, অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল দেওয়া, অন্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া এমন কারণেও অনেকের টাকা পৌঁছায়নি। ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়ায় অনেকের টাকা সেখানে চলে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে। তবে পুজোর ছুটি মিটে যেতেই দ্রুত সমাধানে উদ্যোগী হচ্ছে বিকাশ ভবন। ৩০ অক্টোবর থেকেই সব পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে কি না তার খোঁজ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দফতর। এমন নির্দেশ তাঁদের কাছে রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকেরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিদর্শক নজরুল হক সিপাই বলেন, “আমাদের জেলায় এক লাখ ১৫ হাজারের মতো পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা পাওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে ৪,৫০০ মতো পড়ুয়া এখনও পর্যন্ত সেই টাকা পায়নি। তবে আমরা প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি, কালীপুজোর আগেই সেই টাকা পেয়ে যাবে।”

একই ছবি কলকাতার ক্ষেত্রও। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, দক্ষিণ দিনাজপুরেও একই ছবি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর তার জন্য সরকারের তরফে যে তৎপরতা চলছে তা নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “বিদ্যালয়গুলোকে বাঁচাতে, পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করতে যদি এর দশ ভাগের এক ভাগ তৎপরতা দেখাত, তা হলে এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাটা বেঁচে যেত। সরকারি অর্থের অপচয় কী ভাবে করতে হয় তা এই সরকারের কাছ থেকে শেখা উচিত।”

প্রসঙ্গত, করোনা অতিমারির পরে ২০২১ সালে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করে। এ বছর শুধু দ্বাদশ নয়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও টাকা দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য রাজ্য বাজেটে ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছিল অর্থ দফতর।

money Tab Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy