শিক্ষক নিয়োগের জট কাটবে কবে, প্রশ্ন তুলছেন এসএসসি-র পরীক্ষার্থীরা। এক দিকে যেমন রয়েছেন নতুন পরীক্ষার্থীরা, অন্য দিকে তেমনই ২০১৬ প্যানেল বাতিল হওয়ায় চাকরি হারানো ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা নতুন কাজে যোগ দিতে না পারলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে তাঁদের দাবি। একের পর এক মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে।
এরই মধ্যে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দিলেন, সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যাতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুতে কোনও সুবিধা করতে না পারে, তাই নিয়োগ বানচাল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা।
এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। কেন ‘দাগি’দের নাম ইন্টারভিউ তালিকায় রয়েছে, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ এর আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০১৬-র বাতিল হওয়া প্যানেলে যে সমস্ত ‘অযোগ্য’ প্রার্থী চিহ্নিত করা হয়েছিল, তাঁদের নাম, ঠিকানা, পিতৃপরিচয়-সহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। অবশেষে বুধবারের সুপ্রিম-নির্দেশের পর ‘অযোগ্য’দের সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে বৃহস্পতিবার।
তালিকা প্রকাশের বিষয়টি বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই ওই তালিকা প্রকাশ করবে এসএসসি।” একই সঙ্গে তিনি জানান, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। সেই অনুযায়ী এসএসসি কাজ করছে।
বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) সমস্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টে ফেরত পাঠিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আপাতত হাই কোর্টই নেবে। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, এক জনও ‘দাগি’ প্রার্থী যেন চাকরি না পান, তিনি বিশেষ ভাবে সক্ষম হলেও নন। কেন ‘দাগি’ হওয়া সত্ত্বেও বিশেষ ভাবে সক্ষম প্রার্থীর নাম ইন্টারভিউ তালিকায় রাখল এসএসসি? এ প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যাখা, বিষয়টি এসএসসি-র সিদ্ধান্ত।
শুধু তা-ই নয়, বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে নতুন প্রার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় বসার বিষয়টিও। এসএসসি-র নিয়োগবিধি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সে প্রসঙ্গে এ দিন ব্রাত্য বলেন, “আদালত তার পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে, কোনও রায় দেননি বিচারপতি। কী ভাবে কী হবে তা এসএসসি-র উপর ছেড়ে দিতে হবে।”
ব্রাত্য এ দিন ফের ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কোনও ‘যোগ্য’ প্রার্থীকে যাতে চাকরিহারা না হতে হয়, তা দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শূন্যপদ বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে।”