তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তীকে পাঁচ বছরের জন্য ‘সেন্সর’ করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার উপাচার্য শান্তা দত্ত দে সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই ‘শাস্তি’র ব্যবস্থা করতে হল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক, বেআইনি। বেআইনি উপাচার্য যাওয়ার আগে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
গত ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সূচিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল চাপানউতর। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পরীক্ষা পিছোতে রাজি হননি। অভিযোগ, পরীক্ষা পিছোনোর জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং শাসকদলের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়েছিল উপাচার্যকে।
আরও পড়ুন:
সে সময় অভিরূপের নেতৃত্বে প্রথম উপাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় টিএমসিপি। পরে উপাচার্যকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করেন ওই ছাত্রনেতা। তার পরই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের এই পদক্ষে কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে।
উপাচার্য জানিয়েছেন, সর্বশেষ সিন্ডিকেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ‘সেন্সর’ করা হচ্ছে অভিরূপকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কোর্সে আর তিনি নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন না। পিএইচডি বা এমফিল-ও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করতে পারবেন না তিনি। এখানে কোনও চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
শান্তা এ দিন বলেন, “দল শাস্তি দেয়নি তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে শাস্তি দিতে হল। বর্তমান ছাত্র নয়, তবুও ছাত্রনেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে চূড়ান্ত খারাপ ভাষায় উপাচার্য এবং তাঁর পদকে অপমান করেছেন। এটা কোন ব্যক্তিকে আক্রমণ করা নয়।”
শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। তিনি দাবি করেন, ছাত্রনেতার কটূক্তির পর কোনও বিবৃতি দেননি ব্রাত্য বসু। বরং নিজেও কটূক্তি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ছাত্রনেতার শাস্তি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হবে। তিনি বলেন, “একজন ছাত্রের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ কোন পর্যায়ে গেলে এটা হতে পারে তার এটা প্রমাণ। আমি ওই ছাত্রকে আশ্বস্ত করতে চাই এই নিয়ম সাময়িক। এতে যদি তার কেরিয়ার নষ্ট হয় আমরা তার পাশে আছি। নতুন উপাচার্য যিনি আসবেন তাঁকে আমরা অনুরোধ করব, যাতে এই শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিরূপ। তিনি বলেন, "প্রতিহিংসামূলক আচরণ, কেয়ারটেকার উপাচার্যের কাছে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। ২০২৩ সালে আমি পিএইচডি পরীক্ষা দিয়েছি। ফলাফল দু'বছর ধরে আটকে রেখেছিল আমি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করি বলে। শান্তদেবীর যোগ্যতা নেই এই পদে বসার।"