Advertisement
E-Paper

‘মা দুর্গার কাছে একটাই প্রার্থনা, আমার ছেলেটা যেন বিচার পায়’, লিখলেন যাদবপুরের স্বপ্নদীপের পিতা

তিন বছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচ থেকে উদ্ধার হয়েছিল বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর দেহ। শিক্ষাক্ষেত্রে র‌‌্যাগিং ঘিরে সেই মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা এখনও চলছে। পুজোর আগে কলম ধরলেন সেই ছাত্রের বাবা।

রামপ্রসাদ কুন্ডু

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১৬
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

দুর্গাপুজোয় এক সময়ে দারুণ আনন্দ ছিল। দুই ছেলেকে কলকাতার ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যেতাম। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী দেদার আনন্দ— আমার ছোট পরিবার ছিল সুখী। স্ত্রী আর দুই ছেলেকে নিয়ে কী হৈ হৈ করে কাটাতাম। নবমী, দশমী ওরা মামার বাড়ি যেত। আর আমি আমার পাড়ার পুজোয় ব্যস্ত থাকতাম।সব শেষ হয়ে গেল।

২০২৩ আর ২০২৪ সালের পুজো কাটিয়েছি ঘরে বসে, আমার ঘর ভরা হাহাকার। ’২৩ সালে বড় ছেলেকে হারানোর পর থেকে দুর্গাপুজো বলে আমাদের আর কিছু নেই, শুধু আছে যন্ত্রণা। বড় ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলাম। আর আমাদের সেই স্বপ্নকে নাকি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, অচৈতন্য, নগ্ন অবস্থায়। বাঁচানো যায়নি আমার ছেলেকে।

আমার ছেলেকে ওরা কেড়ে নিল।আমার কষ্টের কথা কার কাছে বলব? ওর মা সব সময়ে কাঁদে, ‘আমার ছেলেকে এনে দাও, ছেলেকে ছাড়া আমি বাঁচব না।’ ওর মায়ের এই আর্তনাদ আমাকে বেশি কষ্ট দেয়।নদিয়ার বগুলায় আমাদের ছোট্ট সংসার। বড় ছেলের মৃত্যুর পর এ বার তৃতীয় পুজো। আমার ছোট ছেলেটাও খুব একা হয়ে গিয়েছে।

ওরা দুই ভাই তো সব সময়ে একসঙ্গে থাকত। দুই ভাই একসঙ্গে ফুটবল ক্লাবে প্র্যাকটিস করতে যেত ছোটবেলা থেকে।‌ শীতকালে একসঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলত। পুজোর সময়ে একসঙ্গে দু’জনে ঠাকুর দেখত, খুব আনন্দ করত।

এখন পুজোর পর পুজো আসে, আর যায়। আমরা সন্তানহারা পরিবার, মা দুর্গার কাছে কাতর আবেদন জানাই, ছেলের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তারা যেন শাস্তি পায়। পুজো মানে এখন শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, আমাদের ছোট্ট ছেলেটা যেন বিচার পায়। সন্তানকে তিল তিল করে মানুষ করেছিলাম। কলকাতার নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলাম। কে জানত এত জঘন্য পরিবেশ! যাদের রক্ষা করা উচিত ছিল, তারাই ভক্ষক হয়ে উঠল। মায়ের কাছে প্রার্থনা করি, যেন আর কারও সন্তান এ ভাবে হারিয়ে না যায়। এখনও আমরা বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখছি।

Jadavpur University Boys Hostel Death Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy