Advertisement
E-Paper

আইটি দুনিয়ায় ‘ওয়েবসাইট ডেভেলপার’ হিসাবে পা রাখতে চাইছেন? জেনে নিন পড়াশোনার খুঁটিনাটি

‘ওয়েবসাইট ডেভেলপার’ হতে চাইল কী কী বিষয়ে দক্ষ হতে হবে, ওই পদে চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ কেমন, কোথায় কেমন বেতন দেওয়া হয়— এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে রইল তথ্য।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩২
Career prospects in Website Development.

পেশা হিসাবে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টে কারা সুযোগ পেতে পারেন? প্রতীকী চিত্র।

অনলাইন-নির্ভর যুগে পছন্দের বিষয় সম্পর্কে জানতে একটা ক্লিকের প্রয়োজন। ওই ক্লিক বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের যে কোনও তথ্য চোখের সামনে তুলে ধরে। যে ঠিকানায় ক্লিক করতে হচ্ছে, তা পৌঁছে দিচ্ছে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে। তাতেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর নানা দেশের রকমারি তথ্যের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।

পড়াশোনা থেকে শুরু করে দৈনিক কাজের ভিত্তিতে ২ কোটি ওয়েবসাইট পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এত সংখ্যক ওয়েবসাইট সক্রিয় রাখা এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন। সেই বিশেষজ্ঞদের ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি) দুনিয়ায় ‘ওয়েবসাইট ডেভেলপার’ বলা হয়। তাঁরাই নিয়মিত ভাবে একটি ওয়েবসাইট কী ভাবে দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, কী ভাবে তাতে সঠিক এবং সময়োপযোগী তথ্য পৌঁছে দেবে— সবটাই সুনিশ্চিত করেন।

দশমের পর কী ভাবে শুরু করবেন?

ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিশেষ করে অঙ্কের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তবে, বর্তমানে দ্বাদশের পড়ুয়ারা এই বিষয়টি নিয়ে পড়ার সুযোগ পেতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন সংসদ, সেন্টাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং-এর তরফে এই বিষয়টি বৃত্তিমূলক কিংবা ইলেক্টিভ বিষয় হিসাবে পড়ানো হয়ে থাকে।

If you want to practice this subject after tenth grade, you can also take classes online.

দশমের পর এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা করতে চাইলে অনলাইনেও ক্লাস করতে পারবেন। প্রতীকী চিত্র।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ:

স্নাতক স্তরে ‘ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট’ আলাদা করে পড়ানো হয় না। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, কম্পিউটার সায়েন্স, গ্রাফিক্স অ্যান্ড ওয়েব ডিজ়াইন নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়তে হয়। তাতেই ওয়েবসাইট তৈরি করার বিষয়গুলি শেখানো হয়। তার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা সমতুল পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়ে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করা আবশ্যক।

তবে, অনলাইনে কিংবা দূরশিক্ষা পদ্ধতিতে এই বিষয়টি নিয়ে কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি (এনআইইএলআইটি)-র, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি)-র মতো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেও ওই কোর্স করার সুযোগ থাকে।

খরচ কত?

সরকারি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার জন্য ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা বার্ষিক খরচ হতে পারে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ওই খরচ ৪৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা বার্ষিক ফি হিসাবে জমা দিতে হয়।

ডেভেলপারের প্রকারভেদ:

ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ‘ইউজ়ার ইন্টারফেস’ থাকা আবশ্যক। ওয়েবসাইটে কোন অংশে ছবি থাকবে, কোন অংশে সরাসরি কথা বলার নম্বর দেখা যাবে, কী ভাবে প্রতিটি বিষয় সাজানো হবে— তার সবটাই ঠিক করেন ‘ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপার’। এ ক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহীদের এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্টের বিষয়গুলিতে সড়গড় হতে হবে। এই প্রতিটি বিষয় ওয়েবসাইট তৈরির বিশেষ ‘ল্যাঙ্গোয়েজ়’।

‘ব্যাক এন্ড ডেভেলপার’ ওয়েবসাইটের পেজ তৈরির নেপথ্যে যে সমস্ত ‘প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস’ রয়েছে, তার ডেটাবেস তৈরি করা এবং রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্ব পালন করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের জাভাস্ক্রিপ্টের সঙ্গে পাইথন, পিএইচপি, রুবি-র মতো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গোয়েজ় এবং লারাভেল, স্প্রিং-এর মতো ফ্রেমওয়ার্কের কাজ সম্পর্কে জানতে হবে।

‘ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপার’রা ব্যাক এবং ফ্রন্ট এন্ড-এর কাজ একসঙ্গে সামলে থাকেন। এ ছাড়াও ওয়েবসাইটটি পরীক্ষামূলক ভাবে কতটা সফল, বাগ (যান্ত্রিক সমস্যা) সমাধান করার মতো কাজও তাঁদের করতে হয়।

The work of developers depends on the content of the website.

ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু অনুযায়ী ডেভেলপারদের কাজ নির্ভর করে। প্রতীকী চিত্র।

কাজের সুযোগ:

ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজি শাখার বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর অনেকেই আলাদা করে কোর্স করে বিষয়টি রপ্ত করে থাকেন। সার্টিফিকেট থাকলে ফ্রেশার হিসাবে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থায় ট্রেনি হিসাবে কাজের সুযোগ থাকে। কাজ শিখতে পারলে ভবিষ্যতে পদোন্নতির সম্ভাবনাও রয়েছে।

এ ছাড়াও পড়াশোনা শেষে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং-য়ের সুযোগও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনলাইনে কাজ করার চল রয়েছে। এর জন্য গুগল ক্লাউডের তরফে বিশেষ ডেভেলপার কমিউনিটি তৈরি করা হয়েছে, যেখান থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ শেখার সুযোগ পেতে পারেন।

বেতনক্রম:

সরকারি সংস্থাগুলিতে ‘ওয়েবসাইট ডেভেলপার’-দের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার নিরিখে প্রতি বছরে ৫ লক্ষ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়ে থাকে।

তবে, বেসরকারি এবং বহুজাতিক সংস্থাগুলিতে ‘ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপার’ পদে অভিজ্ঞতার নিরিখে কাজের জন্য বার্ষিক বেতন হিসাবে সাধারণত তিন লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।

একই ভাবে ‘ব্যাক এন্ড ডেভেলপার’-এর ক্ষেত্রে শুরুতে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন হলেও পরে তা ১ লক্ষ ৬৬ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। ‘ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপার’দের কাজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার নিরিখে ৪ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বার্ষিক বেতন দেওয়া হয়।

Career after 12th IT Job
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy