পরীক্ষার প্রস্তুতি সংগৃহীত ছবি
ভারতে প্রতি বছর সরকারি চাকরির যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলি আয়োজিত হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল— ইউপিএসসি (ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন), এসএসসি (স্টাফ সিলেকশন কমিশন) ও আইবিপিএস (ইনস্টিটিউট অফ ব্যাঙ্কিং পার্সোনেল সিলেকশন)। প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী এই পরীক্ষাগুলি দিলেও মাত্র হাতেগোনা কিছু জনই এগুলিতে কৃতকার্য হন।
বর্তমানে দেশের অনেকাংশে বেসরকারীকরণ শুরু হয়ে গেলেও, সরকারি চাকরির প্রতি জনসাধারণের আকর্ষণ এখনও অটুট রয়েছে। সরকারি চাকরির সুরক্ষিত জীবনের প্রলোভন থেকে নিজেদের নিরস্ত রাখা যে সত্যি কঠিন, তা নিয়ে তেমন দ্বিমতও নেই।
অনেকেই মনে করেন, সরকারি চাকরির পরীক্ষায় পাশ করতে হলে দিনে ১২ ঘন্টার বেশি পড়াশুনো করতে হবে বা প্রচণ্ড মেধাবী হতে হবে অথবা সব কাজ ছেড়ে শুধু পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে কিংবা নিজের ৯টা-৫টার চাকরি ছেড়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি না নিলে পরীক্ষায় পাশ করা যাবে না। কিন্তু এই চিন্তাভাবনাগুলি সব সময় ঠিক হয় না, কারণ প্রতিনিয়ত এই পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাশ করার জন্য দরকার বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল।
এই প্রতিবেদনে সাতটি উপায় আলোচনা করা হল, যেগুলি মেনে চললে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে।
১. গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ: পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরুর আগে প্রথমেই যে পরীক্ষা দিতে চান, তার ব্যাপারে সমস্ত তথ্য জেনে নেওয়া দরকার। সবার আগে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য নথি ভাল করে খতিয়ে দেখা উচিত। এর পর যোগ্যতার মাপকাঠিগুলি যাচাই করে পরীক্ষা কাঠামো ও সিলেবাসটি ভাল ভাবে জেনে নিতে হবে। এ ছাড়াও , পরীক্ষার নিয়োগ বা পরীক্ষা পদ্ধতির ব্যাপারে কোনও নতুন তথ্য এসেছে কি না দেখার জন্য সংবাদপত্র ও সরকারি ওয়েবসাইটেও চোখ রাখতে হবে।
২. দৈনিক রুটিন প্রস্তুত করা: পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা তথ্য জানার পরে একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করতে হবে পরীক্ষার্থীদের। সিলেবাসের সমস্ত বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে এই রুটিন বানাতে হবে। কোন বিষয়ের জন্য কত সময় পরীক্ষার্থী বরাদ্দ করবেন, তা-ও ভাল ভাবে এই রুটিনে উল্লিখিত রাখতে হবে। এর ফলে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁকি পড়বে না।
৩. সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে সব খবরাখবর রাখতে হবে: প্রতিটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেই বেশ খানিকটা অংশ থাকে, যেখানে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সংক্রান্ত প্রশ্ন থাকে। তাই যে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে মানুষের জীবনকে নানা ভাবে প্রভাবিত করছে,সে সম্পর্কিত সমস্ত খবর পরীক্ষার্থীদের রাখতে হবে। এই জন্য সমস্ত খবরের চ্যানেল ও সংবাদপত্রে নজর রাখতে হবে।
৪. বিগত বছরগুলির প্রশ্নপত্রগুলির সমাধান করা: পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিগত বছরের প্রশ্নপত্রগুলির সমাধান করাও একটি শক্তিশালী প্রস্তুতি কৌশল। ওই প্রশ্নপত্রগুলির সমাধান করলে পরীক্ষায় কেমন ধরনের প্রশ্ন আসে, কোন কোন বিষয়ে বেশি প্রশ্ন আসে, কী ধরনের নম্বর দেওয়া হয় প্রতিটি প্রশ্নে— এই সমস্ত ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়। প্রতিদিনের রুটিন এই প্রশ্নপত্রগুলি সমাধানের অভ্যেস করলে পরীক্ষার সময় খুব সুবিধা হয়।
৫. রিজনিং ও অ্যাপটিটিউটের অভ্যেস করা: প্রতিটি সরকারি পরীক্ষায় রিজনিং ও অ্যাপটিটিউটের উপর একটি অংশ থাকে। তাই প্রতিনিয়ত এই বিষয়গুলি ভাল মতো অভ্যেস করলে পরীক্ষার সময় সুফল পাবেন পরীক্ষার্থীরা।
৬. নোটস লেখা: প্রতিনিয়ত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় যদি বিভিন্ন বিষয়ে মূল ব্যাপারগুলি নোট নিয়ে রাখা যায়, তা হলে সেই পয়েন্টগুলি সাধারণত পরীক্ষার্থীদের খুব ভাল ভাবে মনে থেকে যায়। এ ছাড়াও, পরীক্ষার আগে শেষ মুহূর্তে সমস্ত সিলেবাস দেখে নেওয়ার সময়ও এই নোটগুলি খুব উপকারে লাগে।
৭. সুস্থ থাকা: সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগে সুস্থ থাকতে হবে। সুস্থ না থাকলে এই সমস্ত প্রচেষ্টাই বৃথা যাবে। তাই পরীক্ষার জোরদার প্রস্তুতি নিলেও শরীরকে কখনোই অবহেলা করা যাবে না।
যে কোনও সরকারি পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে গেলে কখনওই হতোদ্যম হলে চলবে না। নিজেদের ইতিবাচক মনোভাব ও ক্রমাগত প্রচেষ্টা যদি জারি থাকে তাহলে পরীক্ষার্থীরা সাফল্য পাবেনই, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy