নানা টানাপড়ানের পর নির্বিঘ্নে শেষ হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আইন কলেজগুলিতে প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষা। কালীপুজোর আগেই হবে ফলপ্রকাশ।
মঙ্গলবার বিএ এলএলবি পরীক্ষার পাঁচ বছরের শিক্ষাক্রমের প্রবেশিকা পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। সারা রাজ্যের পাঁচটি সেন্টারে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রবেশিকা পরীক্ষায় দিয়েছে ৯৬ শতাংশ পড়ুয়া। মোট আবেদনকারী ছিল ৪,১৫০ জন মতো। এরমধ্যে ৩৯০০ মতো পরীক্ষার্থী মঙ্গলবারে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। মোট আসন রয়েছে ২১৭০টি।
আরও পড়ুন:
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে পরীক্ষা। কোনও কেন্দ্র থেকে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’
বার কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি কলেজ। তার মধ্যে চারটি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি। প্রথম থেকে এই পরীক্ষায় স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি অভিযোগ নিয়ে সতর্ক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বছর হাজরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগকে দুরে রেখে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঠিক করা হয়। স্বচ্ছতা ও গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে নিজে ব্যবস্থা পরিচালনা করেন।
পরীক্ষা এ বছর নেওয়া হয় সম্পূর্ণরূপে কম্পিউটার পরিচালিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। সেক্টর ফাইভ, বারুইপুর, তারাতলা, কল্যাণী ও মধ্যমগ্রাম এই পাঁচটি জায়গায় পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছিল। পরীক্ষা যাতে স্বচ্ছ ভাবে হয় এ বার বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজের কয়েকটির বিরুদ্ধে পরীক্ষায় স্বজনপোষণ এবং আসন বিক্রির অভিযোগ সামনে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে। এ ছাড়া গত জুন মাসে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ক্যাম্পাসের ভিতর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। সেখানেই তদন্ত করতে গিয়ে পরীক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। ইতিমধ্যেই কসবা কলেজে ভর্তি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে তার তদন্ত চালাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমতি ছাড়াই প্রায় এক দশক ধরে আইন বিভাগ চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বার কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি কলেজ। তার মধ্যে চারটি সরকারি ও ১০টি বেসরকারি। ২০১৮ সালের পর থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অনুমোদন ছিল না। অনুমোদনের জন্য দেয় ৩৫ লক্ষ টাকা বকেয়া রেখেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সেপ্টেম্বর মাসের বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তরফ থেকে তার অনুমতি পান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সাধারণত এই পরীক্ষা হওয়ার কথা জুলাই মাসে। কিন্তু অনুমোদন ও দুর্নীতির কারণে তা আয়োজন হল চার থেকে পাঁচ মাসের মাথায়।