প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি-র একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের তালিকা। সেখানে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের আন্দোলনের প্রথম সারির নেতৃত্বের অনেকেই ডাক পেলেন না। তবে এখনই আন্দোলন বা আদালতমুখী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তাঁরা। বরং নবম-দশম-এর ফলপ্রকাশের দিকে তাকিয়ে চাকরিহারাদের ওই অংশ। আবার অনেকের দাবি শূন্যপদ বৃদ্ধির।
আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডল। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ— দু’টি ক্ষেত্রেই তিনি পরীক্ষা দিয়েছেন। একাদশ-দ্বাদশের লিখিত পরীক্ষার ফলে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫১। অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার ২০ নম্বর যোগ করে হয়েছে ৭১। কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে ইন্টারভিউয়ে তাঁরাই ডাক পেয়েছেন, যাঁদের নম্বর ৭৪-এর বেশি।
চিন্ময় বলেন, ‘‘আমাদের এখন একটাই কাজ— নবম-দশমের ফলের দিকে তাকিয়ে থাকা। তবে বহু ‘যোগ্য’ চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা শুধুমাত্র একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্যই পরীক্ষা দিয়েছেন। তালিকায় তাঁদের নাম না আসায় জীবন-জীবিকা এখন সঙ্কটের মুখে। তাঁদের জন্য সরকার কী করবে, সেটাই দেখার।’’
আরও পড়ুন:
আন্দোলনের অপর এক মুখ সুমন বিশ্বাস। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বায়োলজিক্যাল সায়েন্স বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তিনিও ডাক পাননি। তবে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের দাবি তুললেও নবম-দশমের ফল বেরোনো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান তিনি। সুমন বলেন, ‘‘বর্তমানে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাধানের একমাত্র পথ শূন্যপদ বৃদ্ধি করা। আরও যদি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শূন্যপদ বৃদ্ধি করা যায়, তা হলে এই সমস্যার সমাধান হবে। নিজেদের চাকরি ফিরিয়ে আনতে রাস্তায় নামাই একমাত্র পথ। তবে নবম-দশমের ফল বেরোনো পর্যন্ত অপেক্ষা করছি।’’
অন্য দিকে, চাকরিহারাদের পাশাপাশি নতুনদের অনেকেরও দাবি, বেশি নম্বর পেয়েও তাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। তাঁদের দাবি, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার ফলে তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন। তবে এই দাবি মানতে নারাজ ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। তাঁদের পাল্টা দাবি, ২০ হাজার ৫০০ মতো চাকরিপ্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন পরীক্ষার্থী।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শূন্য আসনের সংখ্যা ১২ হাজার ৪৪৫। ১:১.৬ নিয়ম মেনে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে প্রায় কুড়ি হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে। ‘যোগ্য’দের একাংশের দাবি, এর মধ্যে ৯৫০০ মতো নতুন। এক ‘যোগ্য’ প্রার্থী সঙ্গীতা সাহা বলেন, ‘‘পরীক্ষা ব্যবস্থাকে বানচাল করার জন্য এক অংশ ভুল তথ্য প্রচার করছে। এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেটি লক্ষ্য করলে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে কত জন নতুন প্রার্থী ডাক পেয়েছেন। বরং ছ’সাত বছর ধরে চাকরি করার পর যাঁরা ডাক পেলেন না, তাঁরাই বঞ্চিত হলেন।’’