স্কুলপড়ুয়াদেরও এ বার চর্চা করতে হবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে। নয়াদিল্লির ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-র তরফে জানানো হয়েছে এমনই। ‘ভারতীয় ভাষা সামার ক্যাম্প’ আয়োজনের নিয়মবিধি মেনে দেশের সমস্ত স্কুল নিয়ে সামার ক্যাম্প আয়োজন করার নির্দেশ জারি হয়েছে।
ছোট ছোট গল্পের আকারে দেশের সেনাবাহিনীর কর্মকৌশল বোঝানো হবে পড়ুয়াদের। এরই পাশাপাশি ‘অপারেশন সিঁদুর’ কিংবা ‘অপারেশন বিজয়’-এর মতো অভিযান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে হবে স্কুলপড়ুয়াদের। তাদের লেখা সেরা তিনটি বাছাই গল্প ‘মর্নিং অ্যাসেম্বলি’র সময় অন্য পড়ুয়াদের শোনাতে হবে। এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে যাতে পড়ুয়াদের গল্প বলা, লেখা কিংবা শোনার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, তা নিশ্চিত করবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
আরও পড়ুন:
যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধানশিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানিয়েছেন, সশস্ত্র সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ সম্পর্কে পড়ুয়াদের সচেতন করাটা শিক্ষকদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তবে শুধুই প্রতিরক্ষা নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতি, খাদ্যাভাস এবং ভাষা নিয়ে কাজ করতে পারলে শিক্ষকেরাও লাভবান হবেন বলে মনে করে তিনি।
এনসিইআরটি-র নির্দেশিকা অনুযায়ী, দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্য সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে চর্চার জন্য স্কুলের ৭৫-১০০ জন পড়ুয়াকে শামিল করতেই হবে। আলাদা করে মোট ২৮ ঘণ্টার ক্যাপসুল কোর্সের ক্লাস করাতে হবে সপ্তাহান্তের দিনগুলিতে। অথবা, স্কুলের নিয়মিত পঠনপাঠন শেষ হওয়ার পরও এই আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে, এই নির্দেশিকা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে, রাজ্যের স্কুলগুলির তরফে। এ জন্য স্কুল শেষে আলাদা করে ক্লাসের প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক-শিক্ষিকারা।
আরও কী কী বিষয় শেখানো হবে?
- দৃশ্য-শ্রাব্য মাধ্যমে গল্পের ছলে ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্যের বৈচিত্র সম্পর্কিত বিষয়গুলি শেখার সুযোগ পাওয়া যাবে।
- ভার্চুয়ালি দেশের বিভিন্ন শহর ঘুরিয়ে দেখানো হবে।
- ট্র্যাফিক নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যাবে।
- বিভিন্ন ভাষার দেশাত্মবোধক গান শেখার সুযোগ মিলবে।
ক্যাম্প এবং কোর্সের ক্লাস শেষ হওয়ার পর কুইজ়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পড়ুয়া কী শিখল, তা যাচাই করা হবে। যোগদানকারীরা প্রত্যেকেই শংসাপত্র পাবে। এনসিইআরটি-র নির্দেশিকা মেনেই রাজ্য, জেলা এবং স্কুল স্তরে সমস্ত বিষয়টি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিক এবং স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা।
কেন্দ্রের তরফে এর আগেও দেশের বৈচিত্রময় ভাষা, সংস্কৃতি সম্পর্কে স্কুলপড়ুয়াদের ওয়াকিবহাল করতে পাঠ্যক্রমে বিভিন্ন ‘কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি’ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্কুল পাঠ্যক্রমে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সংযোজনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। এখন তা নিয়ে ইতিবাচক চর্চার পথে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র।