চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়া হবে রাজ্যের তরফে। এমনই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জারি করা হয়েছিল বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু তার পরেও টাকা ঢুকল না শিক্ষাকর্মীদের অ্যাকাউন্টে!
এ দিকে বৃহস্পতিবার বিধাননগরের করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিল করলেন ‘যোগ্য গ্রুপ সি ও ডি অধিকার মঞ্চ’-এর শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের দাবি, ‘যোগ্য’-দের জন্য সরকার আসলে কী ভাবছে, তা স্পষ্ট করুক।
এপ্রিল মাসের গোড়ায় এসএসসি-র প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা। চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাঁরা ‘যোগ্য’। কেন তাঁরা ‘অযোগ্য’-দের জন্য এমন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবেন? শুধু তা-ই নয়, তাঁদের প্রশ্ন ‘অযোগ্য’রা কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এখনও তাঁদের প্রাপ্ত বেতন ফেরাচ্ছেন না?
আরও পড়ুন:
রাজ্য সরকার ভাতার কথা ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারির পরও তাঁরা দু’মাস ধরে কোনও বেতন বা ভাতা কিছুই পাচ্ছেন না! একই সঙ্গে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁরা আর কোনও নিয়োগ পরীক্ষায় বসবেন না। এ বিষয়ে যা করণীয় তা সরকার করুক।
এ দিনের মিছিলের পর শিক্ষা দফতরের মুখ্য সচিবের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তাঁরা। জমা দেন দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি। আলোচনার পর গ্রুপ সি চাকরিহারা শিক্ষাকর্মী সুজয় সর্দার বলেন, “আমরা হতাশ। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম । কিন্তু তা হয়নি। আমরা আর পরীক্ষা দেব না।” তাঁরা চান, সরকার অবিলম্বে আদালতে রিভিউ পিটিশন করুক। তত দিন পর্যন্ত পুরোনো চাকরিতে বহাল রাখতে হবে তাঁদের। কারণ তাঁরা ‘যোগ্য’। এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি তরফে পদক্ষেপ না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।
গত এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিলের নির্দেশের সঙ্গেই এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেয় রাজ্যকে। পাশাপাশি, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চাকরিহারা শিক্ষকদের বেতন দিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন পাবেন তাঁরা। কিন্তু চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় তাঁদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা যথাক্রমে মাসিক ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। তিনি জানান, সরকার চাকরিহারাদের প্রতি সংবেদনশীল। চাকরি চলে যাওয়ায় তাঁদের পরিবারের উপর প্রভাব পড়ছে। তাই গোটা মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাতা হিসাবে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই মতো মে মাসে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে রাজ্য।