Advertisement
E-Paper

স্বচ্ছ পরীক্ষার আশ্বাসেও সন্তুষ্ট নন ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা! তাড়া করছে নিয়োগ দুর্নীতির আতঙ্ক

বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই নিয়োগ দুর্নীতির কাদা নিজের হাত থেকে মুছে ফেলতে চাইছে সরকার। স্বচ্ছতাকে সামনে রেখে নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে চাইছে স্কুল শিক্ষা দফতর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২২
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

পরীক্ষা হয়েছে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ভাবে। নিয়োগ হবে ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার’, পরীক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন ব্রাত্য বসু। কিন্তু সেই শুকনো কথায় কি আদৌ চিড়ে ভিজছে?

না, পরীক্ষা দিয়েও সরকারের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছেন না ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, একবার পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েও সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতির কারণেই চাকরি হারিয়েছেন। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে এত বছর পর ফের বসতে হচ্ছে পরীক্ষায়। বিনা দোষে এত হেনস্থার পর আর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না সরকারের উপর।

এ দিকে বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে নিয়োগ দুর্নীতির কাদা ঝেড়ে ফেলতে চাইছে স্কুল শিক্ষা দফতর। স্বচ্ছতাকে সামনে রেখে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে চাইছে সরকার। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সব রকম ব্যবস্থা করেছি। আমার বিশ্বাস যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নে‌ওয়া হয়েছে, তাতে কমিশনের প্রতি আস্থা ফিরবে চাকরিপ্রার্থী ও সমাজের।”

কিন্তু, এই বক্তব্যে কোনও ভাবেই আশ্বস্ত হচ্ছেন না চাকরিহারারা। ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার আন্দোলনের অন্যতম মুখ সঙ্গীতা সাহা বলেন, “২০১৬ সালেও পরীক্ষা স্বচ্ছ ভাবেই হয়েছিল। দুর্নীতি হয়েছিল প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে। এ বারেও যে তা হবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? আমরা অগ্নিপরীক্ষা দিয়েছি। সফল হব কি না, তা নিয়ে এখন‌ও অনিশ্চয়তা রয়ে গিয়েছে। সরকারের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখা সম্ভব নয়।”

শিক্ষামন্ত্রীর উল্লেখ করা স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। তাঁদের অনেকেই দাবি, স্বচ্ছতার নামে শাঁখা-পলা থেকে কলম পর্যন্ত নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি পরীক্ষাকেন্দ্রে। অথচ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর কক্ষে তেমন নিরাপত্তা বা নজরদারি ব্যবস্থা তাঁরা দেখেননি। অনেক কেন্দ্রেই ছিল না সিসি ক্যামেরা। ‌

শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অনশন মঞ্চের নেতা সুমন বিশ্বাস পর পর দু’টি রবিবার পরীক্ষা দিয়েছেন। নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর পরীক্ষা ভাল হয়নি। সুমন বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে ভরসা করতে পারছি না। সরকার ‘যোগ্য’দের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করুক। তার পর ওঁর বক্তব্যের মূল্যায়ন করা হবে।”

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক ধাক্কায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছিল। আবার আদালতেরই নির্দেশে ন’বছর বাদে রাজ্যে নিয়োগপরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। যদিও ঠিক কত জন দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন আর কত জন ‘যোগ্য’ তার তালিকা প্রকাশ করা যায়নি। ফলে অনিশ্চয়তা থেকেই গিয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আবার তো দুর্নীতি হতে পারে! ফের সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেতে পারেন কেউ! তার ফল আবার ভুগতে হতে পারে যোগ্যদের!

চাকরি হারিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের লাথি খেতে হয়েছিল শিক্ষক অমিত রঞ্জন ভূঁইয়াকে। তিনি বলেন, “আমরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। পরীক্ষা দিলেও চাকরি পাব কি না, তা এখন‌ও জানি না। সরকারের উচিত আশ্বাস না দিয়ে সমস্ত ‘যোগ্য’কে সসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।”

WBSSC Recruitment WB Teachers Job
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy