প্রতীকী ছবি
যত্রতত্র ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার ও পানীয় জলের অপব্যবহারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরে। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে বিভিন্ন লেক, জলাশয় ও ভূগর্ভস্থ জল শুকিয়ে যাওয়ায় জলের ব্যাপক হাহাকার দেখা দিয়েছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে। জলের অপচয় রুখতে সচেতনতার পাশাপাশি বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে স্কুলগুলি।
জলের অপচয় নিয়ে সমীক্ষার কাজে এগিয়ে এসছে কলকাতার যাদবপুর বিদ্যাপীঠ ও ঠাকুরপুকুর বড়িশা বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুল-সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাদের পড়ুয়াদের দিয়ে সমীক্ষার কাজে উদ্যোগী হয়েছেন তারা। স্কুলের তরফ থেকে জলের অপচয় রোধের পাশাপাশি পড়ুয়াদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে বাড়িতে দৈনিক তাঁদের কত জল খরচ হয় তার হিসাব নেওয়ার। এই সমীক্ষার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রো ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদ নামে সংস্থা। শুধু সমীক্ষায় নয় বাড়ির ছাদে কী ভাবে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা যায় সে ব্যাপারে স্কুলগুলিকে পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলা হয়েছে ।
ঠাকুরপুকুর বড়িশা বিবেকানন্দ গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সংযুক্তা বিশ্বাস বলেন, “জলের অপর নাম জীবন। তাই জল অপচয় রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। স্কুলস্তর থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে বেঙ্গালুরুর মতো হাইটেক সিটির ঘটনা এড়ানো যাবে কলকাতায়। সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা দৈনিক কত জল খরচ হয় তার একটা হিসাব যেমন পাব, পাশাপাশি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ নিয়েও আমরা ভাবনা-চিন্তা শুরু করছি।”
স্কুলের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে সবার আগে ছাত্রীদের নিজের এলাকায় কতগুলি কল আছে তা দিয়ে জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে তা সমীক্ষা করানো হয়। তাতে দেখা যায় বেশির ভাগ পুরসভার পানীয় জলের লাইনে কল নেই। অর্তাৎ সেখানে অবিরাম জল পড়ে নষ্ট হয়। পরে তা কাউন্সিলরকে তথ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। এই সমীক্ষার কাজে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের যুক্ত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সকল পড়ুয়াকে এই সমীক্ষার কাজে যুক্ত করা হবে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠে ক্লাসে বিশেষ ভাবে পানীয় জল অপচয় ও সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। যাতে শৌচালয়গুলিতে কেউ কল খুলে না রাখে এবং নিজের বাড়িতেও জলের পাইপলাইন গুলি ঠিক আছে কি না, তা নিয়ে যেন তারা সচেতন থাকে। সেই বিষয়ে যাতে পড়ুয়ারা রিপোর্টও জমা দেয়, তার জন্য একটি মনিটারিং টিমও গঠন করা হয়েছে ক্লাসে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “বেঙ্গালুরুর ঘটনার পর জলের অপচয় রোধ করতে স্কুলস্তর থেকে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে তাই আমরা এই উদ্যোগী হয়েছি। আগামী দিনে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা ভাবনাচিন্তা করছি।”
প্রাথমিক ভাবে ৪৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে একটি সচেতনতার কাজ শুরু করা হয়েছে। এদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy