প্রথম দিন থেকেই অভিভাবকেরা আশঙ্কায় ছিলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওএমআর শিটে অঙ্কের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না পরীক্ষার্থীরা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম সেমেস্টারের সময়সীমা নিয়ে আতঙ্ক ছিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও।
শুক্রবার অঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে অনেকেই জানায়, সব প্রশ্নে উত্তর দিতে পারেনি তারা। যদিও প্রায় সকলেই জানিয়েছে, প্রশ্ন সহজ হয়েছিল। মূল সমস্যা তৈরি হয়েছে প্রশ্নপত্রের দৈর্ঘ্য এবং অঙ্ক কষার পর্যাপ্ত জায়গা না পাওয়ায়।
এই প্রথম ওএমআর শিট-এ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে পড়ুয়ারা। ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে ৪০ বা ৩৫ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে তাদের। অঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে বেগম রোকেয়া স্কুলের ছাত্রী কোয়েনা বাগ বলেন, “প্রশ্ন যা ছিল, তাতে পরীক্ষা ভাল হওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘ প্রশ্নপত্র শেষ করার সময়ই পেলাম না।”
আরও পড়ুন:
লবনহ্রদ বিদ্যাপীঠের ছাত্র সাগ্নিক নন্দী বলেন, “প্রশ্নপত্র মোটামুটি কঠিন-সহজ মিলিয়েই হয়েছে। সব থেকে বেশি সমস্যা তৈরি হয়েছে অঙ্ক কষার জায়গা নিয়ে। সময়ের অভাবও ভুগিয়েছে। সব মিলিয়ে পরীক্ষা ততটা ভাল হয়নি।” এর আগেই সংসদ জানিয়েছিল অঙ্ক কষার জন্য অতিরিক্ত পাতা দেওয়া হবে প্রশ্নপত্রের সঙ্গে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলেই জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা স্বীকার করে নিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও। তবে তারা সমস্ত দায় ঠেলে দিয়েছে প্রশ্নকর্তা শিক্ষকদের উপর। এ প্রসঙ্গে সংসদের এক কর্তা বলেন, “এই সময়ের মধ্যে এত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সত্যিই অসুবিধার। ‘মডারেটর’দের (যে সমস্ত শিক্ষক প্রশ্ন তৈরি করেছেন) আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।” ওই কর্তা দাবি করেছেন, ৫০ নম্বরের উত্তর যাতে সহজে এবং দ্রুত দেওয়া যায় এমন প্রশ্ন করতেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কাউন্সিলের তরফে। কিন্তু তা মানা হয়নি।
তবে শুধু অঙ্ক নয়, পদার্থবিদ্যা, রাশিবিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্ন যথেষ্ট দীর্ঘ করা হয়েছে বলেও উঠেছে অভিযোগ। অঙ্ক পরীক্ষা প্রসঙ্গে এক অভিভাবক শিল্পা নন্দী বলেন বলেন, “আমাদের বাচ্চাদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করছে শিক্ষা সংসদ। যে অঙ্ক কষতে বাড়িতেই সময় লাগে চার থেকে পাঁচ মিনিট, পরীক্ষার হলে সেটি কী করে দু’মিনিটের মধ্যে হবে?”
এ প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি আমরা জানি। আমি নিজেও অসন্তুষ্ট। সবাইকে আশ্বস্ত করছি পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে মূল্যায়ন করা হবে।” পাশাপাশি কেন শিক্ষা সংসদের গাইডলাইন মেনে প্রশ্ন করা হল না, তা জানতে পরীক্ষার পরই বৈঠকে বসা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে অভ্যন্তরীণ বৈঠকে বসবে শিক্ষা সংসদ। এ ছাড়া, পুজোর পর কাউন্সিল ও পরীক্ষা কমিটির বৈঠক রয়েছে বলেও জানাচ্ছে শিক্ষা সংসদ। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে পরীক্ষার জন্য কতটা সময় বৃদ্ধি করা হবে।