‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীর নতুন প্রতিষ্ঠানের পথ চলা শুরু হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। শিলিগুড়িতে ‘টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ ওয়ার্ল্ড স্কুল’-এর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মেয়েদের জন্য তৈরি এই স্কুলটি গড়ে উঠেছে শিলিগুড়ির সিটি সেন্টারের কাছেই হিমাচল বিহারে। পড়াশোনার মানের জন্য ইতিমধ্যে নজর কাড়ছে বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি উন্নত পরিকাঠামো-সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের এই স্কুলটি।
শিলিগুড়ি এবং আশপাশের অঞ্চলের অভিভাবকদের কাছে স্কুলের নিয়মানুবর্তিতাও যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। যাঁরা নিজেদের সন্তানকে দেশ থেকেই অস্ট্রেলিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চাইছেন, তাঁদের জন্য বড় সুযোগ এনে দিয়েছে ‘টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ ওয়ার্ল্ড স্কুল’। উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীও এই স্কুলের প্রশংসা করেছেন। নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে এখানে। ‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীর বিশ্বমানের এই স্কুল শুধু শিলিগুড়ি নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের অন্যতম উৎকর্ষ শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে উঠবে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পড়ুয়ারা এখানে ভর্তি হতে শুরু করেছেন। বিদেশি পড়ুয়ারাও ভর্তি হচ্ছেন।
সোমবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ শিল্প সম্মেলন থেকে ভার্চুয়ালি এই স্কুলের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। নারীশিক্ষায় অবদানের জন্য টেকনো ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর সত্যম রায়চৌধুরীকে অভিনন্দন জানান তিনি। ‘টেকনো ইন্ডিয়া’ কর্তার সামাজিক অবদানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সত্যম অনেকগুলি হাসপাতাল এবং স্কুল-কলেজ করেছেন। এ বার যুক্ত হচ্ছে মেয়েদের জন্য একটি ‘ওয়ার্ল্ড স্কুল’। তিনি বলেন, “খুব ভাল। অনেক অভিনন্দন। ভাল করে করো। সত্যমের আগ্রহ আছে এই সব করার। এখানে হস্টেলও আছে।

টেকনো ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর সত্যম রায়চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
টেকনো ইন্ডিয়ার নতুন স্কুলের উদ্বোধন করার পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই গোষ্ঠীর ১৫টি ক্যাম্পাস রয়েছে উত্তরবঙ্গে। ‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীকে ফ্যাশন নিয়ে পড়াশোনার জন্য একটি কোর্স চালু করার প্রস্তাবও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, উত্তরবঙ্গের ছেলেমেয়েরা খুব স্মার্ট। দার্জিলিং, কালিম্পং, শিলিগুড়ি, মিরিক, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বুঝিয়ে দেন গোটা উত্তরবঙ্গের তরুণসমাজের মধ্যে এই নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার উত্তরবঙ্গের শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীর কর্ণধার সত্যমও। তিনি বলেন, “২৬ বছর আগে, ১৯৯৯ আমি প্রথম শিলিগুড়িতে কাজ শুরু করেছিলাম। শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এসআইটি) তৈরি হয়। তখন উত্তরবঙ্গে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিল, জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। দ্বিতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে এসআইটি কাজ শুরু করে। তার পরে প্রতিটি জেলায় গিয়ে আমি উত্তরবঙ্গকে কভার করেছি। আজকে উদ্বোধন হল টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ ওয়ার্ল্ড স্কুলের। এই ক্যাম্পাস মিলে উত্তরবঙ্গে ১৫টি ক্যাম্পাস হল। একই সঙ্গে আমাদের গ্রুপের ১০৩টি ক্যাম্পাস গড়ে উঠল।”
‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীর বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্যও মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান গোষ্ঠীর কর্তা। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবমতো আগামী দিনে ফ্যাশন নিয়ে পড়াশোনার নতুন প্রতিষ্ঠান চালু করার আশ্বাসও দেন সত্যম। তিনি জানান, এটির নাম হবে ‘স্কিল নলেজ এবং ফ্যাশন ইউনিভার্সিটি’। কয়েক মাসের মধ্যেই শিলিগুড়ির শালবাড়িতে এর কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী ‘টেকনো ইন্ডিয়া’ গোষ্ঠীর কর্ণধার।