Advertisement
E-Paper

উপাচার্য নিয়োগের খসড়া নীতিকে মান্যতা দেওয়া উচিত রাজ্যের, মন্তব্য ইউজিসি চেয়ারম্যানের

প্রকাশিত নয়া খসড়ায়, যাঁরা বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্র, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা প্রশাসনিক উচ্চপদে রয়েছেন, তাঁরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৬
UGC

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সমাবর্তনে ইউজিসি সচিব। নিজস্ব চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের জন্য ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) যে খসড়া তৈরি করেছে, শিক্ষার স্বার্থে তা সমস্ত রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মান্যতা দেওয়া উচিত। কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ১৮তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই জানালেন ইউজিসি চেয়ারম্যান মামিডালা জগদেশ কুমার।

সম্প্রতি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগে বড় পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেছে ইউজিসি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই যার বিরোধিতা করেছে বাংলা, কেরল-সহ অন্যান্য রাজ্য। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অপচেষ্টা করছে। ইউজিসি চেয়ারম্যানের বক্তব্য, “স্বাধীনতার আগে বা পরে উপাচার্য নিয়োগের দায়িত্ব ছিল আচার্যের হাতেই। আমরা তার কোনও পরিবর্তন করিনি। তাই এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একযোগে কাজ করা উচিত।”

উপাচার্য নিয়োগের যে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে ইউজিসি, আচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বা সেনেটের প্রতিনিধিরা থাকবেন— এ কথা বলা হয়েছে। ২০১২ সালে বিধি পরিবর্তন করে সেখানে ইউজিসির বদলে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হয়। ২০২১-এ তৃণমূল সরকার বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করে, নিয়োগের সার্চ কমিটিতে থাকবেন উচ্চ শিক্ষা সংসদের প্রতিনধি, উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি এবং আচার্যের প্রতিনিধি। সেই বিল বিধানসভায় পাশ হলেও রাজভবনে সই হয়ে এখনও আসেনি। তার মধ্যেই ইউজিসির এই নয়া খসড়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

এ প্রসঙ্গে জগদেশ বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য, উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকদের শূন্যস্থান পূরণ করা এবং গবেষণার বিভিন্ন কাজে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা।”

এই খসড়ায় শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রে পেশাদার, শিল্পপতি এবং বেসরকারি ফার্মের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অর্থাৎ ‘নন অ্যাকাডেমিক’-দেরও উপাচার্যপদে নিয়োগ করা যাবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, “শিক্ষার পরিসর এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, সেখানে এক জন শিক্ষাবিদ ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিতেরাও নজির গড়ছেন, তাই এই সিদ্ধান্ত। আমাদের মূল উদ্দেশ্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রের উদ্যোগপতিদের উপাচার্যপদে নিয়োগ করে শিক্ষাক্ষেত্রে নয়া ভাবনার প্রসার ঘটানো।” উল্লেখ্য, যাঁরা ১০ বছর শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও যাঁরা ১০ বছর অন্যান্য ক্ষেত্রে, গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে কর্মরত, তাঁদের উপচার্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

রাজ্যের তরফ থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ইউজিসি-র তরফ থেকে কোনও টাকা পাচ্ছেন না। এর ফলে যাদবপুর-সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কুমার বলেন, “২০১৭ সালে আমরা এই টাকা বরাদ্দ করার জন্য বহু প্রকল্প চালু করেছি। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য আনা হয়েছে রুসা। এ ছাড়াও ন্যাশনাল রিসার্চ ফ্যাকাল্টি প্রকল্প আনা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য। এখন প্রকল্পের অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। তাই এটাকে দয়া করে প্লেটে সাজানো খাবার ভাববেন না যে চাইলাম আর পেয়ে গেলাম। ইউজিসির নিয়ম মেনে, ‘ন্যাক’-এর গ্রেড এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাঁদের দক্ষতা এবং কাজের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অর্জন করতে পারবে।”

সম্প্রতি আইআইটি বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একের পর এক পড়ুয়ার আত্মহত্যার খবর সামনে এসেছে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউজিসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “এটা সত্যি খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা। এ ক্ষেত্রে আমাদের নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। তা মেনে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।”

University Grants Commission M Jagadesh Kumar St. Xaviers College UGC Guidelines
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy