সরকারি সূচি না মেনেই সামিটিভ পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে স্কুলগুলি! খবর পেতেই নড়ে বসল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য আঙুল তুলছেন এসআইআর-এর কাজের দিকে।
স্কুলগুলিতে কবে হবে তৃতীয় সামেটিভ পরীক্ষা— তা আগেই জানিয়ে দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু বহু সরকারি এবং সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সময়ের আগেই পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, পর্ষদ নির্ধারিত সূচি না মেনে বেশ কিছু স্কুল পরীক্ষা নিতে শুরু করে দিয়েছে। কিছু স্কুলে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। অথচ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সূচি অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সামেটিভ পরীক্ষা হওয়ার কথা ১ ডিসেম্বর থেকে ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ব্যাখ্যা, পরীক্ষা যদি আগে এগিয়ে আনা হয় তা হলে যে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম শেষ করা সম্ভব নয়। মাধ্যমিকের টেস্ট শেষ হওয়ার পর নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্কুলগুলির হাতে কিছুটা সময় থাকে। ওই সময় সরকারি ছুটি প্রায় থাকে না বললেই চলে। এই সময়ই নিয়মিত ক্লাস করানো হলে পাঠ্যক্রম শেষ করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু এই সময়ের ক্লাস বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিলে তা-ও হবে না।
স্কুলগুলির অনিয়ম নজরে আসায় পর্ষদের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পর্ষদ নির্ধারিত সূচি না মেনে পরীক্ষা নেওয়া অর্থই হল পর্ষদের আইন অমান্য করা। প্রধানশিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আইন অমান্য করলে ব্যবস্থা নেবে পর্ষদ। পর্ষদের এক কর্তা বলেন, “পঠনপাঠন বন্ধ করে পরীক্ষা নেওয়া মানে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি। প্রধানশিক্ষকদের উচিত নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলোচনা করে কাজ করা।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে প্রায় ৯০০০ স্কুল রয়েছে। স্কুলগুলির ব্যাখ্যা, পরীক্ষা ব্যবস্থায় কিছু অদলবদল করার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে এসআইআর-এর। এই মুহূর্তে বহু শিক্ষক নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিএলও হিসাবে। তাই শিক্ষকদের উপর চাপ কমাতেই আগে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তাঁরা হাতে একটু সময় পান।
নারায়ণদাস বাঙুর স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “নিয়ম মানতে আমরা সকলেই বাধ্য। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুলগুলিকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে নিজেদের সুবিধার্থে। এই সময় শিক্ষকের অভাব। খাতা দেখার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় পেলে সময় মতো ফল প্রকাশ করা যেত।”
নিয়মভঙ্গকারী স্কুলগুলির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে পর্ষদ? সূত্রের খবর, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করে প্রধানশিক্ষকদের দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। জারি হতে পারে কারণ দর্শানোর নোটিস। প্রধানশিক্ষকের জবাবে সন্তুষ্ট না হলে তাঁকে সাসপেন্ড করা হতে পারে পর্ষদের তরফে।