রাজ্যের পড়ুয়াদের বিজ্ঞানমুখী গবেষণায় আগ্রহ বাড়াতে এ বার রাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (ডিএসটিবিটি) নিয়ে আসছে বিশেষ পোর্টাল। সরকার স্বীকৃত বহু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা বিষয়ে গবেষণা করে থাকে। সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন জার্নালও প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সময়ে। সেই সব জার্নাল সংরক্ষিত থাকলেও তা এত দিন পড়তে পারত না বিজ্ঞানে গবেষণায় আগ্রহী পড়ুয়ারা। এ বার ডিএসটিবিটি-র উদ্যোগে এই পোর্টাল চালু হলে গবেষণায় আগ্রহী সব পড়ুয়ারই সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং জৈব প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। এ ছাড়া, বাংলা ভাষাতেও যাতে পড়ুয়ারা গবেষণা করতে পারেন, তার উপরেও জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শুক্রবার জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। সেই সুবাদে ৩২তম ওয়েস্ট বেঙ্গল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কংগ্রেস-এর আয়োজন করা হয়েছিল। তিন দিন ব্যাপী সম্মেলন চলেছে ডিএসটিবিটি-র উদ্যোগে। রাজ্য জুড়ে নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর-গবেষক স্তরের পড়ুয়ারা অংশ নেন এই সভায়। আগেই শিলিগুড়ি, মালদহ, রামপুরহাট, মেদিনীপুর, নদিয়া ও কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকদের নিয়ে বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এই ছ’টি জায়গায় মোট ১২টি বিভাগে বহু পড়ুয়াই গবেষণার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সব ক’টি বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়দের নিয়ে এ বার এই তিন দিন ব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ডিএসটিবিটি সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলস্তর থেকে দেখা যায় বিজ্ঞানচর্চা নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে পড়ুয়ারা। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমুখী করতে রাজ্য সরকার বিশেষ অনুদান দিয়েছে। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ২০০টি স্কুলের নাম নথিভুক্ত করেছে ডিএসটিবিটি। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘মোট ১৫ কোটি টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির স্বার্থে। এ ছাড়া কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও সাহায্য করা হয় তাদের গবেষণার উন্নতির স্বার্থে।’’
আরও পড়ুন:
৩২তম ডিএসটিবিটি কংগ্রেস সম্মেলনে মন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন ডিএসটিবিটি-র সচিব বিজয় ভারতী-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। বিজয় বলেন, ‘‘আমরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকগুলি আরও উন্নত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছি। হিমালয়ান টেকনোলজি, সুন্দরবন টেকনোলজি, ইলেকট্রিক চার্জিং স্টেশন-সহ এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলি উপযুক্ত গবেষণার মাধ্যমে উন্নত করা সম্ভব।’’
এ দিকে গবেষণার ক্ষেত্র হিসাবে ভাষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইংরেজি ছাড়াও রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যাতে বাংলা ভাষাতেও গবেষণা করা যায়, তার জন্য বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে ডিএসটিবিটি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি গবেষক-বিজ্ঞানীদের অনুরোধ করব, তাঁরা যেন বাংলা ভাষায় বই লেখেন। যাতে সমস্ত পড়ুয়াই বিজ্ঞানমুখী হতে আগ্রহ পায় এবং গবেষণার ক্ষেত্রে ভাষা কোনও বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।’’