বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জ়িয়ার মৃত্যুতে তাঁর পুত্র তারেক রহমানের হাতে ভারতের শোকবার্তা তুলে দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বুধবার দুপুরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকের সঙ্গে দেখা করেছেন। ভারতের শোকবার্তাও তারেকের হাতে তুলে দিয়েছেন জয়শঙ্কর।
মঙ্গলবারই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, খালেদার শেষকৃত্যে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জয়শঙ্কর। সেই মতো খালেদার শেষকৃত্যে যোগ দিতে বুধবার সকালে ঢাকায় পৌঁছোন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ জয়শঙ্কর ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে বাশারে বাংলাদেশ বায়ুসেনার ঘাঁটিতে নামেন। তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব এম ফরহদ হোসেন। দুপুর ২টো নাগাদ (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী) খালেদার শেষকৃত্য হবে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন জয়শঙ্করও। শুধু তা-ই নয়, খালেদার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ভারতের একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শোকপ্রকাশ করেছেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে বাংলাদেশের রাস্তায়। সকাল ১১টা নাগাদ জিয়ার মরদেহ গুলশানের বাড়ি থেকে বার করা হয়। এর পর বেলা ১২টা নাগাদ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িতে করে তাঁর মরদেহ ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেখানে তিলধারণের জায়গা নেই। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো-র প্রতিবেদন সূত্রে খবর, বিপুল সংখ্যক মানুষ পায়ে হেঁটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের দিকে এগোচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ এসেছেন খুলনা থেকে, কেউ আবার মহাখালী থেকে এসেছেন।
আরও পড়ুন:
ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবন মাঠ এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের রাস্তায় ভিড় সামাল দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খালেদার শেষকৃত্য উপলক্ষে ঢাকায় নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। জ়িয়ার মরদেহ যে গাড়িতে থাকবে, সেটির নিরাপত্তায় ১০ হাজার পুলিশ (বাংলাদেশের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য-সহ) মোতায়েন করার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন সেনাবাহিনীর সদস্যেরাও। জানাজা শেষে দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় জিয়া উদ্যানে তাঁর স্বামী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জ়িয়াউর রহমানের পাশেই সমাধিস্থ করা হবে খালেদাকে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যু হয় খালেদার। একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করার কথা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে।