গতানুতিক পেশার প্রতি আগ্রহ নেই উচ্চ মাধ্যমিকের দুই কৃতীর। তাঁদের লক্ষ্য সিভিল সার্ভিস। তাঁদের নাম অনুস্কা শর্মা এবং তনয় টিকাদার। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে অনুস্কা ৪৯১ এবং তনয় ৪৮৯ নম্বর পেয়ে যথাক্রমে সপ্তম এবং নবম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার নিউ টাউন গার্লস হাই স্কুলের কলা বিভাগের পড়ুয়া অনুস্কা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে চান, ভবিষ্যতে আইএএস হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। এত পেশা থাকতে সিভিল সার্ভিস কেন? অনুস্কার কথায়, “মা ছোটবেলায় শিখিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক হব, এটা যেন সকলকে বলি। বাবাও পুলিশ আধিকারিক। তাই ধীরে ধীরে বিষয়টি সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বড় হয়ে ওই পদের গুরুত্ব বুঝতে পেরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

মা বাবার সঙ্গে অনুস্কা। ছবি: সংগৃহীত।
অনুস্কা আরও জানিয়েছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি, এই পেশায় আসার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে মা-বাবার পাশাপাশি, সহযোগিতা করেছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তবে, পড়াশোনার সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত চর্চার জন্য সময় বাঁচিয়েছেন অনুস্কা। কৃতীর বাবা অমিত শর্মা আলিপুরদুয়ারের সোনাপুর থানার ওসি। মা পাপড়ি শর্মা গৃহবধূ। তাঁরা দু’জনেই মেয়ের ফলাফল নিয়ে খুশি এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনার সিদ্ধান্তে গর্বিত বোধ করছেন। তবে, তাঁরা এও চান, সাধারণ জীবনযাপন করুক মেয়ে, যাতে সামাজিক পরিস্থিতি সামলাতে এবং তৃণমূল স্তরের সমস্যা সমাধানের জন্য দক্ষ প্রশাসক হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন।
অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর বয়েজ় সেকেন্ডারি স্কুল (এইচ এস)-এর কলা বিভাগের ছাত্র তনয় টিকাদার আইএএস হতে চান। তাঁর বাবা অভিজিৎ টিকাদার পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি জানিয়েছেন, ছেলেকে শুরু থেকেই সামাজিকতার শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেই জায়গা থেকে ছেলের এই সিদ্ধান্তে ভীষণ খুশি তিনি।

তনয়ের সিদ্ধান্তে খুশি তাঁর মা বাবা। নিজস্ব চিত্র।
তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই জানা যায়, মা প্রীতিকা টিকাদার গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোমে আক্রান্ত। তবে বর্তমানে তিনি আগের তুলনায় সুস্থ রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তনয় কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? কৃতীর কথায়, “একান্নবর্তী পরিবার হওয়ায় মায়ের যাবতীয় খেয়াল রেখেছেন বড়রা। তবুও পরীক্ষার আগে উদ্বিগ্ন থাকতাম। এখন খানিকটা হলেও নিশ্চিন্ত আমি।”
মেধাতালিকায় নাম থাকায় কতটা খুশি তনয়? তিনি বলেন, “মাধ্যমিকে কিছু নম্বরের জন্য মেধাতালিকায় নাম ছিল না। তাই উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য আরও সময় দিয়েছিলাম। ভাল ফল করব, এটা আশা করেছিলাম। এখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করব। কারণ সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিচারে সিস্টেমের মধ্যে থেকে সঠিক কাজ করাটা ভীষণ ভাবে প্রয়োজন।”