Advertisement
E-Paper

অতিমারিতে স্কুলছুট? শিক্ষার আঙিনায় ফেরার সুযোগ দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ

২০২০ সালের অতিমারি পর্বে মাধ্যমিক পাশ করার পরেও স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছিল কয়েক গুণ। বহু পড়ুয়াই জীবিকার তাগিদে ছেড়েছিল পড়াশোনা।

অরুণাভ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৯:০৪

প্রতীকী চিত্র।

স্কুলছুটদের দ্বিতীয় বার শিক্ষার আলোয় ফিরিয়ে আনা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সম্প্রতি উদ্যোগী হয়েছে এ নিয়ে। দ্রুতই এই পড়ুয়াদের অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে। চলতি শিক্ষাবর্ষে তারা একাদশে নতুন করে ভর্তি হতে পারবে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “নয়া সিমেস্টার পদ্ধতিতে পড়াশোনা করার আগ্রহ দেখিয়েছে বহু পড়ুয়াই। আমার কাছে এমন বহু আগ্রহীর আবেদন ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে। তাই সবটা বিবেচনা করে আমরা তাদের দ্বিতীয় বার পড়াশোনার সুযোগ দিচ্ছি।”

অতিমারি পরিস্থিতির চাপে দীর্ঘ দু’বছর স্কুল প্রাঙ্গনে পঠনপাঠন প্রায় বন্ধই ছিল। ২০২০ সাল থেকে অনলাইনে পড়াশোনা হলেও যথাযথ পরিকাঠামোর অভাব এবং আর্থিক মন্দার সম্মুখীন হওয়ায় অনেক পড়ুয়াই পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে পড়ে। ফলত স্কুলছুটের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পায়, যা প্রতিফলিত হয় ২০২২-এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরিসংখ্যানে। দেখা যায়, প্রায় ৪ লক্ষ পড়ুয়া পরীক্ষায় নাম নথিভুক্ত করেনি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজার দাবি, সেই সময়ে বহু শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। জানা গিয়েছিল, আর্থিক অনটন, পারিবারিক সমস্যার মতো একাধিক কারণে মূল স্রোত থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তিনি বলেন, “সংসদের এই উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।”

শিক্ষা দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্তরে অতিমারি পর স্কুল ছুটের ঘটনা ঘটেছিল ৪.১৮ শতাংশ। আর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট হয়েছিল প্রায় ৪.০১ শতাংশ।

কিন্তু এ নিয়ে উদ্যোগী হতে কেন এত সময় লাগল শিক্ষা দফতর বা শিক্ষা সংসদের? প্রশ্ন তুলেছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। তাঁর কথায়, “এই সিদ্ধান্ত ২০২২ বা ২০২৩ সালে নেওয়া হয়নি কেন? প্রায় চার বছর পর কত জন ড্রপ আউট হওয়া ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে সরকার এই প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করল, বহু পড়ুয়াই স্কুলছুট হয়েছিল।”

তবে শিক্ষক সমাজের একাংশ এ-ও স্বীকার করেছে, আর্থিক অনটন ঠেকাতে জীবিকার পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বহু পড়ুয়াকেই। তার ফলে তাদের ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না বলেই স্কুলছুটের দলে ভিড়তে হয়েছিল। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস অবশ্য জানিয়েছেন, এটি অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। তিনি বলেন, “এতে অন্তত কিছু স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীর সামনে উচ্চ-মাধ্যমিক কোর্স সম্পূর্ণ করার সুযোগ আসবে।”

হঠাৎ কেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে স্কুলছুটদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে? এতে স্কুলগুলিতে ভর্তি করার সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে মোটের উপরে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই উদ্যোগকে স্বাগতই জানাচ্ছেন। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য সমস্যার আশঙ্কার কথা স্বীকার করে নিলেও স্কুলছুটদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে সাফল্যের নজির হিসাবেই দেখছেন।

Madhyamik School Dropout Admission 2024 HS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy