-সাঁওতালির পর এ বার কুড়মালি ভাষায় পঠনপাঠন চালু করতে চায় স্কুল শিক্ষা দফতর। কুড়মি অধ্যুষিত চার জেলায় প্রাথমিক স্কুলে এই পদ্ধতি চালু করার ভাবনা রয়েছে সরকারের। এ জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে।
২০২০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্থানীয় ভাষায় পঠনপাঠনের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তারপর পরই কুড়মি সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা প্রাথমিকস্তরে এই ভাষা সংযুক্ত জন্য আন্দোলন শুরু করেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দেন তাঁরা। পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষা দফতরের কাছেও চিঠি পাঠানো হয়।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে এই ভাষাকে পঠনপাঠনে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে রাজ্যকে। তারপরই এই চার জেলায় কোথায় কত কুড়মালি ভাষাভাষী মানুষের বাস, কোন স্কুলে কত পড়ুয়া— সে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। এ জন্য কুড়মালি ভাষায় পারদর্শী শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা পাঠ্যক্রম কুড়মালিতে অনুবাদ করতে সাহায্য করবেন।
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে কুড়মালি ভাষায় পঠন পাঠন চালুর লক্ষ্যে আদিবাসী দফতরের মতামত জানতে চায় রাজ্য। সে জন্য চিঠিও পাঠান হয়েছে। তবে এই তোড়জোড়ের মধ্যে রাজনীতি খুঁজে পাচ্ছেন শিক্ষকমহলের একাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের কিছু জেলার অধিবাসীদের, বিশেষ করে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের এই দাবি কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি চালু হওয়ার পরই জোরালো হয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের শিক্ষা নীতিকে শুধু মান্যতা দিতে চাইছে রাজ্য। শুধু তা-ই নয়, তারা এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে চাইছে।”
অলচিকি হরফে সাঁওতালি ভাষায় স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। কুড়মিদের তরফ থেকে এই দাবি প্রথমে সংখ্যালঘু মন্ত্রকের অধীনে ল্যাঙ্গুয়েজটিক মাইনরিটিজ (পূর্বাঞ্চল) কমিশনের অফিসে জমা দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে সেই প্রস্তাব যায় মুখ্য সচিবের কাছে। তারপর সর্বোচ্চ স্তরে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর শিক্ষা দফতরের আদিবাসী উন্নয়ন দফতরে যায় সম্মতিপত্র। ওই দফতেরও মতামত চেয়েছে শিক্ষা দফতর।
বর্তমানে পুরুলিয়ার সিধো কানহ বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, ঝাড়গ্রামে রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয় কুড়মালি নিয়ে পড়াশোনা করা যায় বলে জানা গিয়েছে।