Advertisement
E-Paper

প্রায়শই লম্বা ছুটি, পড়াশোনা থেকে মন অন্য দিকে, কী ভাবছে বিভিন্ন স্কুল

উৎসবের লম্বা ছুটির রেশ কাটিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার আগে টেস্ট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পড়ুয়াদের জন্য চিন্তিত শিক্ষক-শিক্ষিকা মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দুর্গাপুজো, কালীপুজো ও দীপাবলির লম্বা ছুটি কাটিয়ে চলতি সপ্তাহে খুলে যাচ্ছে স্কুল। আর সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই পরীক্ষার মরসুম শুরু হচ্ছে স্কুলগুলিতে। অথচ উৎসবের লম্বা ছুটির রেশ কাটিয়ে পড়ুয়াদের মন থেকে পড়াশোনা ফিকে হয়েছে। আর সে কারণেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার আগে টেস্ট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পড়ুয়াদের জন্য চিন্তিত শিক্ষক-শিক্ষিকা মহল। টেস্ট পরীক্ষার পরেই নতুন বছরের শুরুতে জীবনের প্রথম পরীক্ষায় বসার আগে ‘রেমেডিয়াল’ ক্লাস ও অভিভাবকদের নিয়ে ‘স্মার্ট পেরেন্টিং’ ক্লাসের ভাবনা স্কুলগুলির।

পরীক্ষায় হাতের লেখার স্পিড থেকে হ্যান্ড রাইটিং বা সিলি মিসস্টেক দেখা যায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে, তাঁর প্রধান কারণ দীর্ঘ ছুটির সময়কালে প্রত্যেকদিনের অনুশীলন থেকে অনেকটাই দূরে সরে যায় পড়ুয়ারা।‌ অতিমারির আবহে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছিল বিশেষ করে নবম ও একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে।

যোধপুর পার্ক বয়েজের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, “সামনেই মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা, পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ছাত্রদের নিয়ে আমরা স্পেশাল ‘রেমিডিয়াল’ ক্লাস করাব। দীর্ঘ ছুটির ফলে তাদের মধ্যে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি তৈরি হয়েছে সেগুলো যাতে বড় পরীক্ষার আগে ঠিক করা যায় সেই চেষ্টাই করা হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফ থেকে।”

বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা জানিয়েছেন লম্বা ছুটির পর পড়ুয়াদের মধ্যে হাতের লেখার ত্রুটি ও নানা ধরণের ভুল ভ্রান্তি লক্ষ করা যায়, বিশেষ করে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাকরণগত ত্রুটি, বাক্য গঠনের মত সমস্যাও ধরা পড়ে। নিচু ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। অতিমারির সময় যখন দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল তখন থেকেই এই ধরনের সমস্যা সামনে উঠে এসেছে। সেই ঘাটতি আজ‌ও পূরণ হয়নি বলে মনে করেন শিক্ষক-শিক্ষিকা মহল।

ফাইনাল পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা দিতে চলেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। পূজোর লম্বা ছুটির ফলে অভ্যাসের অভাবে নিম্নমানের হাতের লেখা, বানানের নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি, অ‌ঙ্ক- ভৌত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ফর্মুলা ভুলে যাওয়া আর ইতিহাস-ভূগোলের ক্ষেত্রেও তৈরি হচ্ছে নানান সমস্যা। আর তাই পড়ুয়াদের প্রস্তুতি নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের স্কুলগুলি।

বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা মনে করছেন অতিমারি আবহের পর মোবাইল ফোনের আসক্তি হওয়াও এই ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “অতিমারি আবহে পড়ুয়ারা অফলাইন থেকে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পঠন-পাঠন গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে মোবাইলের কুফলগুলিও গ্রহণ করেছে, তাঁর ফলেই পড়ুয়াদের মনোসংযোগের অভাব দেখা দিয়েছে।”

এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে পড়ুয়াদের দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে এবং বড় পরীক্ষায় বসার জন্য উপযুক্ত করে তুলতে স্কুলের তরফ থেকে টেস্ট পরীক্ষার পর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ‘ডাউট ক্লিয়ারিং’ ক্লাস করানো হবে, সেখানে শিক্ষকরা পরীক্ষার খাতা দেখাবেন পড়ুয়াদের। এবং পড়ুয়ারা কেন কম নম্বর পেয়েছে সেটাও জানাবার চেষ্টার পাশাপাশি বিষয় ভিত্তিক ভীতি দূর করবেন। শুধু তাই নয় ‘স্মার্ট পেরেন্টিং’-এর উপর অভিভাবকদেরও ক্লাস করানো হবে। এ ছাড়া মনোবিদ ও মনোবিজ্ঞানীদের নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

রাজ্যের শিক্ষাদফতর মনে করেন কোন পড়ুয়াকে ফেল করানোর মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই। বেশকিছু স্কুল অতিমারি পরবর্তী পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে বর্তমানে পুজোর লম্বা ছুটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বাক্য গঠন, হাতের লেখার উপর হোমওয়ার্ক দিয়েছিল। আবার বেশ কিছু স্কুল অনলাইনে পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ‘ডাউট ক্লিয়ারিং’ ক্লাসও করিয়েছেন।

সাখাওয়াত মেমোরিয়াল-এর প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ বলেন, “হাতে এখন সময় খুব কম, স্কুল খোলার সাত দিনের মধ্যে পড়ুয়ারা যাতে ভাল প্রস্তুতি নিতে পারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। ছুটির আগেই আমরা কিছু হোমওয়ার্ক দিয়ে রেখেছিলাম যাতে পড়ুয়ারা সতর্ক থাকে এবং পড়াশোনা চালিয়ে যায়।”

WB Education school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy