শীতের ছুটি পড়ার আগেই প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের ফলাফল প্রকাশ করতে হয় স্কুলগুলিকে। এর পর নতুন বছর থেকে শুরু হয় নতুন শিক্ষাবর্ষ, নতুন ক্লাস। কিন্তু চলতি বছরে বাংলা শিক্ষা এসএমএস পোর্টালের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কোনও তথ্য আপলোড করতে পারছে না স্কুলগুলি। সমস্যা হচ্ছে ফলপ্রকাশে। গত তিন দিন ধরে পোর্টাল কাজই করছে না বলে দাবি বিভিন্ন স্কুলের।
নারায়ণদাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “১৫ ডিসেম্বর থেকে এই পোর্টাল খোলা হয়েছে। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর থেকে কোনও তথ্য আপলোড করা যাচ্ছে না। ডাউনলোড করে পড়ুয়াদের মার্কশিট দেব কী করে। এটি হাতে না পেলে নতুন বছরে ক্লাস শুরু হবে না সময় মতো।”
আরও পড়ুন:
আবার বেশ কিছু স্কুল জানাচ্ছে, সার্ভার সমস্যার কারণে দিনের বেলায় পোর্টাল কাজ করছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে মাঝরাতে নম্বর আপলোড করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। কেউ আবার সে কাজ করছেন ভোরবেলা।
দমদম শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার বসু বলেন, “শিক্ষকরা সারা রাত জেগেও আপলোড করতে পারছেন না। পরিস্থিতি এমনই যেন মনে হচ্ছে হাতে লিখে মার্কশিট দিতে হবে।” শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, শুক্রবারও বাংলার শিক্ষা পোর্টাল খোলা যায়নি। শিক্ষকশিক্ষিকারা কোনও ভাবে নম্বর আপলোড করতে পারছেন না। অভিযোগ, এই প্রথম নয়। প্রায় প্রতি বছরই কোনও না কোনও সমস্যা হয়। কিন্তু এ বছর বিপত্তি বাড়ছে। কলকাতার এক স্কুলশিক্ষিকা দাবি করেন, “গত কয়েক বছর ধরেই আমরা এই বাংলার শিক্ষা পোর্টালের সার্ভার আপডেট করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সমস্যা যেমন ছিল, তেমনই রয়ে গিয়েছে। শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হোক।”
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, যাতে দ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধান করা হবে।”
নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক স্কুলকে সামেটিভ, ফরমাটিভ ও ক্লাসের পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের ছাত্রছাত্রীরা কেমন ফল করেছে তা এই বাংলা শিক্ষা এসএমএস পোর্টালে আপলোড করতে হয়। তারপর ফের পরীক্ষা করে তা জমা দিলে পড়ুয়াদের নামে মার্কশিট তৈরি হয়। সেই মার্কশিটই ছাপিয়ে প্রধানশিক্ষকদের স্বাক্ষর-সহ পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিতে হয়। পোর্টালে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এই কাজ করতে পারছে না রাজ্যের প্রায় কোনও স্কুলই।