Advertisement
E-Paper

পাড়ুই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

সারদা-মামলার পরে পাড়ুই মামলার তদন্তও এ বার সিবিআইয়ের হাতে গেল। বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন বিচারপতি হরিশ টন্ডন নির্দেশ দেন, সিবিআই সময়ে সময়ে নিম্ন আদালতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেবে। এ দিন বিচারপতি টন্ডন এই তদন্তে ডিজি-র ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল)-এর তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়নি। সিট এই মামলায় একপেশে তদন্ত করেছে। যে রিপোর্ট খামবন্ধ অবস্থায় আদালতে জমা দেওয়ার কথা, সেই রিপোর্টও সরকারি আধিকারিকদের দেখানো হয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১২:৪০

সারদা-মামলার পরে পাড়ুই মামলার তদন্তও এ বার সিবিআইয়ের হাতে গেল। বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন বিচারপতি হরিশ টন্ডন নির্দেশ দেন, সিবিআই সময়ে সময়ে নিম্ন আদালতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেবে।

এ দিন বিচারপতি টন্ডন এই তদন্তে ডিজি-র ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল)-এর তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়নি। সিট এই মামলায় একপেশে তদন্ত করেছে। যে রিপোর্ট খামবন্ধ অবস্থায় আদালতে জমা দেওয়ার কথা, সেই রিপোর্টও সরকারি আধিকারিকদের দেখানো হয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি। এমনকী, অনুব্রত মণ্ডলের প্ররোচনামূলক মন্তব্যের সিডি হাতে পেয়েও ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে তাঁর জবানবন্দি নথিভুক্ত করাননি ডিজি। অথচ অনুব্রতর নাম এফআইআরে ছিল। অনুব্রতর ওই বক্তব্য নিয়ে ডিজি আদালতের কাছে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা আদালতের কাছে সন্তোষজনক নয়। সিট যে তদন্ত করেছে, তাকে প্রভাবিত করেছে রাজ্য সরকার।

বিচারপতি টন্ডন তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, তদন্তে মূল প্ররোচনাকারীকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। একই মামলায় দু’বার এফআইআর দায়ের করা যায় না বলে আদালতে জানিয়েছিলেন সরকার পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন বিচারপতি টন্ডন সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে দু’বার এফআইআর দায়ের করা যেতে পারে।

গত বছরের ২১ জুলাই রাতে বীরভূমের পাড়ুই থানা এলাকায় খুন হন সাগর ঘোষ। ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের তালিকায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম জড়িয়ে যায়। সাগরবাবু খুন হওয়ার ক’দিন আগেই একটি সভায় অনুব্রতবাবু ‘নির্দল প্রার্থীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিন’, ‘পুলিশকে বোমা মারুন’ জাতীয় মন্তব্য করেছিলেন। সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তরা কেন ধরা পড়ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা হয়। এর পরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুলিশের ডিজি-র নেতৃত্বে সিট গড়ে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। কিন্তু সিট গঠনের পরেও অবশ্য অনুব্রত অধরাই থেকে যান। ধরা পড়েননি বীরভূমের জেলা সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরীও। পরে ডিজি-কে আদালতে তলব করে, অনুব্রত কেন গ্রেফতার হচ্ছেন না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি দত্ত। যদিও দীপঙ্কর দত্তের নির্দেশের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার সেই মামলা ডিভিশন বেঞ্চে নিয়ে যায়। বিচারপতি দত্ত শেষ পর্যন্ত মামলাটি ছেড়ে দেন। এর পর বিষয়টি যায় বিচারপতি টন্ডনের কাছে।

বিচারপতি টন্ডনের এ দিনের নির্দেশ প্রসঙ্গে নিহত সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষ আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমরা খুশি। রাজ্য সরকার কোনও তদন্ত করতে দেয়নি এত দিন।” আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “প্রশাসনের আচরণ যে পক্ষপাতদুষ্ট এ নির্দেশে সে কথাই আবার প্রমাণিত হল।” কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানের মন্তব্য: “এ রাজ্যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। প্রশাসনের উপর আর আস্থা নেই মানুষের।” একই সুরে গলা চড়িয়েছে সিপিএম। দলের তরফে প্রবীণ নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশের ন্যাক্কারজনক ভূমিকা প্রকাশ্যে এল। এই রায়ে সাগর ঘোষের পরিবার স্বস্তি পাবে।”

parui case sagar ghosh high court harish tandan latest news online news latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy