বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ যুব মোর্চার। ছবি: পিটিআই।
দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অর্থমন্ত্রীকে বাজেট পেশ করতে দেওয়া হবে না, বিরোধীদের এই দাবিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার চুড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হল কেরল বিধানসভায়। স্পিকারের টেবিল ভাঙচুর, মাইক ভেঙে খুলে ফেলে দেওয়া, মার্শালদের সঙ্গে বিরোধী বিধায়কদের তুমুল হাতাহাতি— এমনই তাণ্ডবের সাক্ষী হয়ে থাকল বিধানসভা। হাতাহাতিতে জখম হয়ে হাসপাতালে যেতে হল তিন বিধায়ক এবং ১২ জন নিরাপত্তারক্ষীকে। তবে এই তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই কিন্তু বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী এম কে মানি।
ভিজিল্যান্স এবং দুর্নীতি দমন শাখা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অর্থমন্ত্রী এম কে মানির বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ ওঠে, বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে মদের লাইসেন্স নবীকরণের সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। দুর্নীতিতে নাম জড়ানো একজন কী ভাবে রাজ্যের বাজেট পেশ করতে পারেন তখনই এই প্রশ্নে তোলেন বিরোধীরা। এই নিয়ে বিরোধী এলডিএফ-র (লেফ্ট ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট) সঙ্গে শাসক ইউডিএফ-র (ইউনাইটেড ডেমক্র্যাটিক ফ্রন্ট) সংঘাত চরমে ওঠে। এলডিএফের আন্দোলনের পক্ষে পথে নামে যুব মোর্চা। অর্থমন্ত্রী মানিকে কোনও ভাবেই বাজেট পেশ করতে না দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্য দিকে যে কোনও প্রকারে অর্থমন্ত্রীকে বাজেট পেশ করানোই ছিল ইউডিএফ-র লক্ষ। এমনকী বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক বার বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠকও করেন স্পিকার এন সাখতান। কিন্তু তাতে যে কাজের কাজ কিছু হয়নি তার প্রমাণ পাওয়া গেল এ দিন সকালে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই এলডিএফ-এর বিধায়করা বিধানসভার দরজা আটকে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বেশ কয়েক জন বিধায়ক বিধানসভার ভিতরে বসে পড়েন। স্পিকারকেও ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এ সময়েই এলডিএফ কর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে অর্থমন্ত্রী কয়েক জন দলীয় বিধায়ক এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে অন্য একটি দরজা দিয়ে অধিবেশন ঘরে প্রবেশ করেন। তাঁকে বাধা দিতে স্পিকারকে ছেড়ে ছুটে যান বিরোধীরা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে শুরু হয় হাতাহাতি। অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করতে শুরু করলে আরও উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা।
অভিযোগ ওঠে, বাজেট পেশে বাধা দেওয়ার জন্য এলডিএফ বিধায়কেরা টেবিলের উপরে চড়ে বসেন, চেয়ার ভাঙচুর করেন। এমনকী অর্থমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয় ভেঙে ফেলে তাঁর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কয়েক জন বিধায়ক স্পিকারের ডায়াসে গিয়ে হাজির হন। তারপর সেখান থেকে চেয়ার ছুড়তে শুরু করেন। কম্পিউটার এবং আলো ভেঙে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় দুই মহিলা-সহ তিন জন বিধায়ক জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। বিধানসভার বাইরেও গোলমাল বাধে। যুব মোর্চা এবং এলডিএফ সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং লাঠি চালায়। উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকেরা এর পর পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিধানসভা সূত্রের খবর, পরিস্থিতি যে এমন উত্তাল হতে পারে তা অর্থমন্ত্রী আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। এর জন্য বৃহস্পতিবার রাতে বিধানসভাতেই থেকে যান অর্থমন্ত্রী-সহ শাসক দলের বেশ কয়েক জন বিধায়ক। এই উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত বাজেট পেশ করেন। সেই ‘আনন্দে’ বাজেট পেশের পরেই ইউডিএফের তরফ থেকে বিধানসভা কক্ষের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy