তেল মন্ত্রকের দফতর থেকে জরুরি নথি নকল করে কয়েকটি তেল সংস্থার কর্মীকে বিক্রি করার অভিযোগে বৃহস্পতিবারই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। শুক্রবার এই নথি পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভি্যোগে এক সাংবাদিক-সহ আরও দু'জনকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হলেন প্রয়াস জৈন এবং শান্তনু সইকিয়া। তাঁরা শাস্ত্রী ভবনের তেল মন্ত্রকের দফতর থেকে চুরি করা নথি সংগ্রহ করতেন বলে অভি্যোগ। শান্তনু সাংবাদিকতার কাজ করতেন। তেল মন্ত্রকের উপরেই তিনি একটি ওয়েব পোর্টাল চালাতেন এবং দিল্লির পাটেল নগরে ধৃত প্রয়াস জৈনের কনসালটেন্সির ব্যবসা ছিল। তাঁদের শুক্রবারই আদালতে হাজির করানো হয়েছে।
গভীর রাতে নকল নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি চড়ে এসে নকল পরিচয়ে তেল মন্ত্রকের অলিন্দে ঢুকে জরুরি নথি পাচারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কেঁপে উঠেছিল দিল্লি। ওই দিনই এই ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। ধৃতদের মধ্যে এক জন ছাড়া বাকিরা তেল মন্ত্রকেরই স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা এই সরকারি নথি কয়েকটি তেল সংস্থার কর্মীকে পাচার করত বলে অভি্যোগ ছিল। ধৃতদের জেরা করে ওই কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার প্রয়াস এবং শান্তনুকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, তেল মন্ত্রকের অফিসে ঢুকে জরুরি নথি নকল করে পাচারের বিষয়টি অনেক আগেই টের পাচ্ছিলেন আমলারা। দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাসাই জানান, সেই ঘটনার তদন্ত করতেই রাতে শাস্ত্রী ভবনের কাছে পুলিশের গোপন পাহারা ছিল। সে সময়ই একটি গাড়িতে তিন জন ব্যক্তি আসেন। দু'জন শাস্ত্রী ভবনের ভিতরে চলে যান। ঘন্টা দু’য়েক পরে তাঁরা গাড়িতে ফিরে আসেন। তখনই হাতেনাতে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে অনেক জরুরি সরকারি নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কয়েক মাস আগে সকালে অফিস খোলার পর তেল মন্ত্রকের জয়েন্ট সেক্রেটারি(এক্সপ্লোরেশন)-র কিছু জরুরি নথিকে ফটোকপি যন্ত্রের উপরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মাস দুয়েক আগে মন্ত্রকের অধিকর্তা প্রশান্ত এস লোখান্ডের অফিসের দরজা খোলা অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। এর পরেই সন্দেহ হওয়ার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরাও। কিন্তু তাতেও নথি নকল করে চুরির ঘটনা রোখা যাচ্ছিল না। পরে তদন্ত চালিয়ে বৃহস্পতিবারই তেল মন্ত্রকের দুই কর্মী-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।