মিছিলে মমতা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় সরকারের জমি বিলের প্রতিবাদে পথে নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, তাঁর দলের অডিট বিতর্ক নিয়ে তিনি আদৌ বিচলিত নন। বরং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি সন্ত্রাসের রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, “সরকার সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। কাউকে সিবিআই দিয়ে, কাউকে ইডি দিয়ে, কাউকে বিএসএফ দিয়ে, আর কাকে কী কী দেখাচ্ছে ভগবানই জানেন।”
সম্প্রতি সিবিআই রাজ্যের শাসক দলের কাছে ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের হিসেব চেয়ে পাঠিয়েছে। বিতর্কের শুরুও সেই থেকে। যদিও তৃণমূল সেই দাবিকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। এ প্রসঙ্গে সিবিআই-কে উদ্দেশ্য করে মমতা আজ স্পষ্ট বলেন, “সেই রিপোর্টে কী দরকার? তোমার যদি রিপোর্ট দরকার হয়, তবে ইনকাম ট্যাক্স দফতর থেকে নিয়ে নাও। আমরা তো রিপোর্ট সাবমিট করেই দিয়েছি। তা হলে এই নোটিসের মানে কী? আসলে ভোট এলেই নোটিস পাঠায়। এই নোটিস জমে জমে দিস্তা হবে, তার পর সেই নোটিস আমি দিল্লিতে পাঠাব। এদের মনে রাখা দরকার, এক দিন জনগণই এদের নোটিস দেবে।”
মমতার এই বক্তব্যে অবশ্য চুপ করে থাকেনি বিজেপি-ও। পাল্টা জবাবে বিজেপি নেতা তথাগত রায় বলেন, “কাগজ দেখতে চাইলে অসুবিধের কী আছে? আসলে ভয় পেয়ে গিয়ে এখন আর্তনাদ করছেন মমতা।”
মৌলালি থেকে ধর্মতলার গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত এ দিনের মিছিলে সামিল ছিলেন কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। মিছিল শেষে গাঁধী মূর্তির পাদদেশের সভায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছুড়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। এ-ও জানিয়ে দিলেন যে, রাজ্যের শাসক দল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও মতেই মাথা নত করবে না।
পাশাপাশি, জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে মমতা মনে করিয়ে দিলেন অতীতের সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা। তিনি বলেন, “সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম— এ রকম অনেক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম আমরা। বলেছিলাম, এ ভাবে জোর করে কৃষকের জমি কেড়ে নেওয়া ঠিক নয়। তার পরেই সারা ভারতবর্ষের টনক নড়ে। এ বারেও আমরা তখনকার মতোই প্রতিবাদ করব। আমাদের স্বচ্ছতা আছে। সেই স্বচ্ছতার জায়গা থেকে আমরা সরে আসব না।”
তার সঙ্গেই তীব্র ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মমতা। বললেন, “ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কিছুরই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার, তার ক’টা পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে? শুধু সেলফি তুলে বক্তব্য রাখা আর কমিউনাল ভায়োলেন্স ছাড়া এই সরকারের আর কিছুই করার নেই।” এ দিনের সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের নৈতিকতারও সমালোচনা করেন মমতা। বলেন, “দিল্লিতে দেখবেন বিজেপি সিপিএমের বিরোধিতা করছে। বাংলায় কিন্তু সেই বিরোধ দেখবেন না। এখানে বিজেপি সিপিএম ভাই-ভাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy