বাংলাদেশে যাত্রিবাহী বাস এবং ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল ৯ জনের। মৃতদের মধ্যে তিন জন শিশু। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যেই গাইবান্ধা ও বরিশালে এই হামলা চালানো হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বরিশাল জেলায় একটি ট্রাকে পেট্রোল বোমা ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। এই হামলায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। শনিবার ভোরে ঢাকা-বরিশাল জাতীয় সড়কে এই ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকটি ফরিদপুর থেকে বরিশালে ফিরছিল বলে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে, শুক্রবার রাতে গাইবান্ধায় একটি যাত্রিবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। এই হামলায় মৃত্যু হয় তিন শিশু-সহ ৬ জনের। গুরুতর জখম হন আরও ৩০ জন। গাইবান্ধার কাছে তুলসীঘাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে হামলার ঘটনাটি ঘটে। বাসটি সুন্দরগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল। সেই সময় সেটিতে ৫০ জন যাত্রী ছিল বলে জানা গিয়েছে। আচমকাই বাসটিতে পেট্রোল বোমা ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। হামলার জেরে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই পুড়ে মৃত্যু হয় চার জনের। জখমদের উদ্ধার করে রংপুরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এ দিন অগ্নিদগ্ধ আরও দু’জনের মৃত্যু হয় ।
সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সাল থেকেই আওয়ামি লিগের সঙ্গে বিএনপি-জামাত-সহ বিরোধী দলগুলির বিরোধ চরমে উঠেছে। রাজনৈতিক হিংসায় উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। হিংসার বলি হয়েছেন অন্তত ৭৫ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকাল অবরোধ এবং নাশকতার ঘটনায় ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সরকার ফেলার বড়সড় চক্রান্তের গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়ে গত ৩ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তাঁর দফতরে অবরুদ্ধ করে পুলিশ। তার পর গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট।
খালেদা জিয়ার ডাকে এই অবরোধ চলছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতন না-ঘটিয়ে এই অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে না বলে ঘোষণা করেন খালেদা জিয়ার পুত্র বিএনপি নেতা তারেক রহমান। তার পর থেকে নাশকতার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। ঢাকা-সহ সর্বত্র চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে গাড়িতে আগুন লাগানো এবং ভাঙচুরের ঘটনা চলছেই।
হিংসার কাছে তাঁর সরকার নতিস্বীকার করবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মন্তব্য: “পাগল হয়ে গিয়েছেন উনি। ভাল-খারাপের বিচারবুদ্ধিও হারিয়ে ফেলেছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে মহাসচিব বান-কি-মুনের মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দুই নেত্রী যাতে তাঁদের মধ্যে সমস্ত রকম বিরোধ মিটিয়ে নেন তার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।