Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

যাদবপুরে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বহিরাগতরা ছিল, দাবি সিপি-র

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বার বহিরাগতের তত্ত্ব খাড়া করল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালবাজারে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ জানিয়েছেন, তাঁর বাহিনী ওই দিন যথেষ্ট সংবেদনশীল ছিল এবং তারা যথেষ্ট ধৈর্য্য সহকারে পুরো ব্যাপারটা সামলেছে। পুলিশ কমিশনার এ দিন যা বলেছেন: গত ১৭ তারিখ রাত্রিবেলা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাটা ঘটে তার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটা ‘ক্ল্যারিফিকেশন’ আমি দিচ্ছি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৭:১৯
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বার বহিরাগতের তত্ত্ব খাড়া করল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালবাজারে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ জানিয়েছেন, তাঁর বাহিনী ওই দিন যথেষ্ট সংবেদনশীল ছিল এবং তারা যথেষ্ট ধৈর্য্য সহকারে পুরো ব্যাপারটা সামলেছে।

পুলিশ কমিশনার এ দিন যা বলেছেন:

গত ১৭ তারিখ রাত্রিবেলা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাটা ঘটে তার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটা ‘ক্ল্যারিফিকেশন’ আমি দিচ্ছি।

একটা হচ্ছে, সচরাচর অথবা সাধারণত পুুলিশ কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢোকে না। এবং আমরা ঢুকতে চাইওনি। কিন্তু যদি কোনও ডিসট্রেস কল আসে বা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যেমন উপাচার্য, অধ্যক্ষ তাঁরা যদি কোনও ডিসট্রেস কল করেন, তাঁরা যদি বলেন যে তাঁরা উদ্ধার হতে চান, তাঁদের প্রাণসংশয় হচ্ছে, অর্থাৎ তাঁরা কোনও হামলার আশঙ্কা করছেন, সেই ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে যদি লিখিত ভাবে কোনও রিকুইজিশন দেন, তখন পুলিশ সেই ঘটনাটি নিজের হাতে নেয় ও সমাধান করে। তখন পুলিশের কর্তব্য থাকে ওই ডিসট্রেস কলটার ব্যবস্থা নেওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিল, আমাদের কাছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লিখিত ভাবে জানান এবং বিভিন্ন সময় তিনি আমাদের পুলিশকে বলেন যে তাঁদের প্রাণসংশয় হতে পারে এবং তাঁদের উপর হামলা হতে পারে। তাঁরা উদ্ধার হতে চাইছেন। শুধু তাই নয়, ওখানে বেশ কিছু মহিলা কর্মী, অধ্যাপিকা তাঁরাও আটকে থাকেন। প্রায় সারা দিন। যত রাত বেড়ে যায় তাঁরা ওখানে অস্বস্তি বোধ করেন, বিশেষ করে মহিলা কর্মীরা অসুস্থ বোধ করেন। সেই কারণে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত রিকুইজিশনের উপর ভিত্তি করে পুলিশ ওখানে যায়। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে পড়ুয়াদের সঙ্গে, আমরা জানি যে, পড়ুয়াদের ব্যাপারটা যথেষ্ট স্পর্শকাতর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটা বাতাবরণ আছে। সেই জন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে পুলিশ-সহ কিছু উচ্চপদস্থ কর্তা তাঁরা আলোচনা করার চেষ্টা করেন। তাঁদেরকে বোঝাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওখানে পরিস্থিতি এ রকম ছিল না, যে পরিস্থিতিতে কোনও রকম আলোচনা বা কথাবার্তা বলা সম্ভব হচ্ছিল। যদিও পুলিশ অনেক ক্ষণ ধরে চূড়ান্ত ধৈর্য্য নিয়ে সেটা করার চেষ্টা করেছে। অবশেষে যখন এটা কিছুতেই আলোচনা করে মেটানো যাচ্ছিল না, এবং আমাদের কাছে এটাও রিপোর্টেড হচ্ছিল যে কিছু বহিরাগত ওখানে ছিলেন। তাঁরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতর এবং তাঁদের হাতে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রও ছিল, এমনই খবর আমাদের কাছে রিপোর্টেড হয়েছিল। এই পুরো ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে যখন পুুলিশকে বলা হয় যে তাঁদেরকে অর্থাৎ উপাচার্য এবং অন্যান্য যে অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং কর্মীরা আটকে আছেন, তাঁদেরকে সঙ্গে করে বের করতে।

এখানে একটা জিনিস বলা হচ্ছে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, কিন্তু আমি জোর দিয়ে বলছি, পুলিশকে বলা হয়েছিল কোনও লাঠি নিয়ে ওখানে প্রবেশ না করতে। পুলিশ যাঁরাই ওখানে ছিলেন তাঁদের মধ্যে অধিক সংখ্যক সিভিল পোশাকে ছিলেন এবং তাঁদের কারও হাতে লাঠি ছিল না। সুতরাং লাঠিচার্জের ঘটনা একেবারেই অসত্য এবং লাঠিচার্জ হয়নি। পুলিশ তাঁদেরকে সঙ্গে করে বের করে নিয়ে আসে এবং যখন পুলিশ ওখানে ছিল এবং তাঁদের সঙ্গে করে বের করে, তখন দেখা যায় যে বেশ কিছু পুলিশকর্মীও আক্রান্ত হন। গালিগালাজ হয়েছিল। এবং ১১ জন পুলিশকর্মী আহত হন। এটাও সত্য কথা নয় যে ওখানে কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। ওখানে পর্যাপ্ত সংখ্যায় মহিলা পুলিশ ছিলেন। সিভিল এবং ঊর্দি পড়ে ছিলেন। যেহেতু ওখানে ছাত্রীরা ছিলেন, সে জন্য আমার মহিলা পুলিশকে ঠিক করে ওখানে পাঠাই। উচ্চপদস্থ কর্তারাও ওখানে ছিলেন। পুলিশ সে দিন যেটা করেছিল, সেটা পুরোপুরি আইনানুগ ভাবে করেছিল এবং কর্তব্যের খাতিরে করেছিল।

প্রশ্ন: উপাচার্যকে যখন আপনারা বের করে আনছিলেন, সেই সময় হঠাৎ আলো নিভে যায়। এটা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

সিপি: এই আলোর ব্যাপারটাতে পুলিশের কোনও ভূমিকা ছিল না। এটা কেন আলোটা নিভেছিল বা কী হয়েছিল, সেটা সম্বন্ধে আমি এই মুহূর্তে তদন্ত না করে কিছু বলতে পারব না।

প্রশ্ন: আপনারা কি ফোর্সের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করার নির্দেশ পেয়েছেন?

সিপি: এখনও পর্যন্ত ফোর্সের বিরুদ্ধে তেমন কোনও অভিযোগ পাইনি। কিন্তু আমরা যতটুকু দেখেছি, আপনারাও দেখেছেন ভিডিওতে, আমরা ফোর্সের কাউকে দেখতে পাইনি ফুটেজে। ফোর্স কারও উপরে কোনও হেনস্থা করেছে বা লাঠিচার্জ করেছে, সেটা আমরা কিছুই দেখতে পাইনি। ফোর্স যথেষ্ট সংবেদনশীল এবং যথেষ্ট ধৈর্য্য সহকারে পুরো ব্যাপারটাকে সামলেছে।

প্রশ্ন: বহিরাগতদের কাছে অস্ত্র আছে বলে আপনাদের কাছে খবর ছিল। খবর কারা দিল? বহিরাগতদের কাছে অস্ত্র থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হল না কেন?

সিপি: বহিরাগত যারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি চলছিল। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই কারা বহিরাগত ছিল, সেটাও আমরা জেনে যাব। এবং এটা রিপোর্টেড হয়েছিল আমাদের কাছে, কিছু ক্যামেরার ছবি বের করার চেষ্টা করছি, যদি পাই আপনাদের জানাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE