Advertisement
০৬ মে ২০২৪

অবতরণে সমস্যা, তবুও প্রাথমিক ভাবে সুস্থির ফিলি

সুস্থির হয়েছে ফিলি। পাঠিয়েছে ছবিও। তবে এখনও চুরি-র (৬৭পি বা চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকো ধূমকেতু) বুকে ঠিক কোথায় সে নেমেছে এবং ঠিকমতো গেঁড়ে বসতে পেরেছে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’-র বিশেষজ্ঞরা। ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি সূত্রে খবর, বুধবার ফিলি-কে মূল মহাকাশ যান রোসেটা থেকে ছাড়া নিয়েই দ্বিধা ছিল। কারণ, ফিলি ল্যান্ডারটির থ্রাস্টারটি ঠিকমতো সাড়া দিচ্ছিল না।

ক্যাপশন: চুরি-র বুকে দাঁড়িয়ে ফিলি। সৌজন্য ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।

ক্যাপশন: চুরি-র বুকে দাঁড়িয়ে ফিলি। সৌজন্য ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ১৮:০৫
Share: Save:

সুস্থির হয়েছে ফিলি। পাঠিয়েছে ছবিও। তবে এখনও চুরি-র (৬৭পি বা চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকো ধূমকেতু) বুকে ঠিক কোথায় সে নেমেছে এবং ঠিকমতো গেঁড়ে বসতে পেরেছে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’-র বিশেষজ্ঞরা।

ফিলি-কে ঠিকমতো চুরির বুকে বসাতে এই থ্রাস্টারটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি যানটির উপরে রয়েছে। চার কিলোমিটার লম্বা ও সাড়ে তিন কিলোমিটার চওড়া চুরির মাধ্যাকর্ষণ এমনিতেই ক্ষীণ। তার উপরে ভূতল খুবই এবড়ো-খেবড়ো। তাই ওয়াশিং মেশিন-এর আকারের, প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম ওজনের ফিলি-কে চুরি তে বসাতে থ্রাস্টার, বিশেষ ধরনের স্ত্রু ও হারপুনএই তিনটি যন্ত্রের উপরে ভরসা করছিল ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’। ঠিক ছিল, যানের উপরে থাকা থ্রাস্টারটি ফিলি-কে চুরি-র ভূতলে চেপে ধরবে। এই অবস্থায় বিশেষ ধরণের স্ক্রু ও হারপুন ভূতলে গেঁথে গিয়ে যানটিকে ঠিকমতো বসাবে। কিন্তু উপরের থ্রাস্টারটি ঠিকমতো কাজ না করায় এই অবতরণে সাফল্যের সম্ভাবনা নেমে আসে ৭৫ শতাংশে। তবুও শেষ পর্যন্ত ফিলি-কে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়।

সেই মতো সাত ঘণ্টার যাত্রা শুরু করে ফিলি। চুরি-র বুকে নামার পরে সঙ্কেতও পাঠায়। সেই সঙ্কেত পেয়ে অবতরণের সাফল্যও ঘোষণা করে দেয় ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’। কিন্তু পরে তথ্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায় যে ভাবে ঠিকছিল ঠিক সে ভাবে অবতরণ করেনি ফিলি। এর পরেই জার্মানির ডার্মস্টেড-এ ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’-র মিশন-কন্ট্রোলে আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে আসে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পরে বৃহস্পতিবার আবার ফিলি-র সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন হলে তথ্য আহরণ শুরু করেন ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’-র বিশেষজ্ঞরা। সেই তথ্যের প্রাথমিক বিশ্লেষণের পরে তাঁদের ধারণা, চুরি-র বুকে অবতরণের পরে বেশ কয়েক বার লাফিয়েছে ফিলি। এর মধ্যে এক বার ফিলি প্রায় এক কিলোমিটার লাফিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সব ঠিক চললে ফিলি, চুরি-র ভূতল স্পর্শ করামাত্র হারপুন বেরিয়ে আসত। বেরিয়ে আসত বিশেষ ধরনের স্ক্রু-ও। কিন্তু তা হয়নি বলেই মনে করছেন তাঁরা। তবে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এখন চুরি-র বুকে ফিলি ঠিকমতো দাঁড়িয়ে আছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা ফিলি-র এই সমস্যা কিছুটা তার পুরনো প্রযুক্তির কারণে। তাঁরা জানান, ২০০৪-এ যাত্রাশুরু করলেও ৯০-এর দশকে ফিলি-কে তৈরি করা হয়। সেই সময়ে মূলত ৮০-এর দশকের মহাকাশ প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হয়েছিল যা এই ধরনের কঠিন অবতরণের পক্ষে যথেষ্ট নয় বলেই তাঁদের মত।

কিন্তু আশঙ্কার ইতি ঘটছে না। কারণ, শুধু তো ঘাঁটি গাড়াই নয়, একাধিক পরীক্ষাও চালাতে হবে ফিলিকে। এর মধ্যে অন্যতম, চুরি-র ভূতল খোঁড়া। কিন্তু, ফিলিতে থাকা ড্রিলার চালালেই ফিলি আবার বেশ কয়েক কিলোমিটার লাফিয়ে উঠতে পারে। সে সময়ে তা চুরি ছেড়ে বেরিয়েও যেতে পারে। একই কারণে হারপুনও চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আপাতত অপেক্ষা করা হচ্ছে। এই সময়ে রোসেটাকে ব্যবহার করে চুরি-র ছবি তুলে ফিলি-র অবস্থান বোঝার চেষ্টা করছেন ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’-র বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE