Advertisement
E-Paper

রাজ্যের বোর্ড নয়, বেশি পছন্দ সিবিএসই-আইসিএসই

জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলোতে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা। অভিভাবকদের বিশ্বাস খানিকটা এমনই। আর এই বিশ্বাসেই পাল্টে যাচ্ছে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চালচিত্র। শহরের স্কুলগুলির একটা বড় অংশই রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বোর্ড ছেড়ে সিবিএসই এবং আইসিএসসি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহী।

মধুরিমা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ১৬:০৫

জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলোতে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা। অভিভাবকদের বিশ্বাস খানিকটা এমনই। আর এই বিশ্বাসেই পাল্টে যাচ্ছে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চালচিত্র। শহরের স্কুলগুলির একটা বড় অংশই রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বোর্ড ছেড়ে সিবিএসই এবং আইসিএসসি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহী।

অভিভাবকদের মতে, সিবিএসই এবং আইসিএসসি বোর্ডের পড়াশোনার মান জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীদের অনেকটা এগিয়ে রাখে। “আমাদের সময় ভীষণ চাপ ছিল সিলেবাসের। বাংলা বোর্ডের পরীক্ষার সময় বড় একটা চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হত আমাদের। আমি চাই না আমার ছেলেকেও সেই রকম চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হোক।” বললেন এক অভিভাবক। সম্প্রতি কমপক্ষে সাতটি টেকনো ইন্ডিয়া স্কুল তাদের বোর্ড পাল্টে সিবিএসই বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্কুলগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বোর্ড পাল্টানোর সিদ্ধান্ত গত ২০০৯ সালেই নেওয়া হয়েছিল। অনুমোদন পাওয়া গেল ২০১৪-য়। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অনুমোদন পাওয়া এখনও বাকি। “আমাদের হায়ার সেকেন্ডারি বোর্ড এখনও রয়েছে, যদিও অনুমোদন পাওয়ার পরে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী সিবিএসই বোর্ডকেই বেশি প্রধান্য দিয়েছে।” জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

বস্তুত, এই চাহিদাটা শুরু হয় ২০১৩ সাল থেকে। ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি অ্যান্ড এনট্রান্স টেস্ট আয়োজনের দায়িত্ব ছিল সিবিএসই বোর্ডের উপর। ছাত্রছাত্রীদের ধারণা ছিল, মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবে এই বোর্ডের পড়ুয়ারা। অনেকে আবার মনে করছেন, দু’টি বোর্ডের পাঠক্রমের বিস্তর ফারাকই এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী। রাজ্যের বোর্ডগুলিতে ভৌতবি়জ্ঞান, জীবনবিজ্ঞানের আলাদা পাঠক্রম হয়, অন্য দিকে সিবিএসই বোর্ডে সোশ্যাল সায়েন্স বিভাগের মধ্যেই পড়ানো হচ্ছে ইতিহাস ভূগোল। আবার বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান একসঙ্গে পড়ানো হয়। সিবিএসই বোর্ডের এক জন পড়ুয়ার মূল্যায়ণ ধারাবাহিক ভাবে সারা বছর ধরেই হয়।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের প্রিন্সিপাল রূপা সান্যাল ভট্টাচার্য বলেন, “চাহিদাটা মূলত অভিভাবকদের পক্ষ থেকেই। এখনও রাজ্যের বোর্ডের আওতায় আছি আমরা। তবে ২০১৮-র মধ্যে আমাদের সিবিএসই-র অনুমোদন পাওয়া হয়ে গেলেই প্রায় সবাই সেই বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হবে।” অন্য দিকে, রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের পক্ষেই মত দিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের মতে, অন্য বোর্ডের প্রতি চাহিদার একটা কারণ হতে পারে ইংরেজি ভাষার সাবলীল শিক্ষা। এটা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যক্তিগত মানসিকতার উপর। এ ছাড়া অন্য কারণ নেই। এখন রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাও যথেষ্ট উন্নত, পাঠক্রম অনেক বেশি জাতীয় স্তরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করা হচ্ছে।

শিক্ষা বিভাগের এক আধিকারিকের মতে, “যত লম্বা উত্তর তত বেশি নম্বর— এই ধারণাটা এখন একেবারেই তলানিতে। সংক্ষিপ্ত উত্তরের প্রশ্নই এখন বেশি। সুতরাং বই ভাল করে না পড়ে গেলে এই নতুন নিয়মে ভাল ফলাফল আশা করাটাও কঠিন। প্রশ্নের ধারাটাও ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ের প্রজেক্টের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” পড়ুয়াদের জন্য সমস্তটাই নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে। যদিও জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বেশির ভাগেরই প্রাথমিক ভরসা কিন্তু সেই সিবিএসই এবং আইসিএসসি বোর্ডের উপরেই।

madhurima dutta kolkata southpoint high school CBSE ICSE techno india
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy