দেশে ফেরার পথে ইরবিল বিমানবন্দরে ভারতীয় নার্সরা। ছবি: রয়টার্স।
অবশেষে মুক্তি! টানটান উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠার অবসান। জঙ্গিদের কবলে টানা ২৩ দিনের বন্দিদশা শেষে দেশে ফিরলেন ৪৬ জন ভারতীয় নার্স। শনিবার দুপুরে তাঁদের নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমান কোচিতে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি। একই বিমানে দেশে ফিরলেন ইরাকে কর্মরত ১৩৭ জন ভারতীয়ও।
ইরাকে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরে সাদ্দাম হুসেনের জন্মস্থান তিকরিত-এ কর্মরত ৪৬ জন ভারতীয় নার্স আটকে পড়েন। এর মধ্যেই জঙ্গিদের হাতে তিকরিত-এর পতন হয়। গত কয়েক দিন ধরে তিকরিত উদ্ধারের জন্য প্রবল আক্রমণ চালাচ্ছিল ইরাকি সেনা। সংঘর্ষের মধ্যে এই নার্সদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়। জানা যায়, তাঁরা হাসপাতালের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আইএসআইএল জঙ্গিরা ভারতীয় নার্সদের তিকরিত-এর হাসপাতালের বেসমেন্ট থেকে তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সরিয়ে নিয়ে যায়। তাঁদের তিকরিত থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে আইএসআইএল-এর দখলে থাকা মসুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, শুক্রবার তাঁরা মসুল থেকে উত্তর ইরাকের কুর্দদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইরবিলে যান। সেখানে অপেক্ষা করছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং-৭৭৭ বিমান। সেই বিমানেই তাঁরা মুম্বই হয়ে কোচিতে আসেন। এর পরে বিমানটি বাকি ভারতীয়দের নিয়ে হায়দরাবাদে উড়ে যায়।
নার্সদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনায় মোদীর সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চান্ডি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কেরলবাসীর উদ্বেগের কথা বুঝতে পেরেছে। বিদেশ মন্ত্রক এবং ইরাকের ভারতীয় দূতাবাসের ঐকান্তিক চেষ্টায় নার্সদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।” তিনি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেও ধন্যবাদ জানান। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে নার্সরা সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা জানান, ২৩ দিন বন্দি থাকার পরে নিজেদের বাড়ি ফিরে আসতে পেরে তাঁরা খুশি। তাঁদের আইএসআইএল-ছেড়ে দেবে এটা তাঁরা ভাবতে পারেননি। যদিও জঙ্গিরা তাঁদের সঙ্গে ভালই ব্যবহার করেছেন বলে তাঁরা জানান। তাঁদের জল, বিস্কুট খেতেও দেওয়া হয়। তবে সুযোগ এলেও অনেকেই আর ইরাকে ফিরে যাবেন না বলে জানান।
কিন্তু কী ভাবে মুক্তি এল?
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন এ বিষয়ে বিশেষ কিছু জানাতে চাননি। তিনি জানান, এখনও বেশ কিছু ভারতীয় ইরাকে আটকে আছেন। যার মধ্যে মসুলে অপহৃত ভারতীয় শ্রমিকরাও রয়েছেন। তাঁদেরও মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এখন কিছু জানালে তা ওই ভারতীয়দের মুক্তির অন্তরায় হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, নার্সদের উদ্ধারে ‘অপ্রচলিত পন্থা’ অবলম্বন করা হয়েছিল। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব-আমিরশাহীর বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রেখেছেন। এ ভাবেই বাকি ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে বিদেশমন্ত্রকের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy