শহরে ফের আক্রান্ত পুলিশ।
সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে মার খেলেন দুই পুলিশকর্মী। ভেঙে দেওয়া হয় এক পুলিশকর্মীর মোবাইল ফোন। এ বার অবশ্য অভিযুক্তদের ধরার ক্ষেত্রে দেরি করেনি কালীঘাট থানার পুলিশ। ওই রাতেই ঘটনাস্থল থেকে এক মহিলা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয় একটি এসইউভি গাড়িও।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মধুময় ঘোষ, শর্মিষ্ঠা ঘোষ এবং সুরজিৎ বেরা। প্রথম দু’জন স্বামী-স্ত্রী। তাঁদের বাড়ি বেহালায়। অপর অভিযুক্ত ওই দম্পতির আত্মীয়। ধৃতদের মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে হাজির করা হয়। শর্মিষ্ঠাদেবী জামিন পেলেও বাকি দু’জনকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
কী হয়েছিল ওই রাতে?
পুলিশ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উল্টো দিকে ওই দিন রাতে হাজরা এবং কালীঘাট রোডের মুখে মোটরবাইক নিয়ে ডিউটি করছিলেন কালীঘাট থানার কনস্টেবল প্রবীর সেন। ভোর পৌনে তিনটে নাগাদ হঠাৎ তাঁর নজরে আসে, একটি এসইউভি গাড়ি বেপরোয়া ভাবে হাজরা রোড থেকে কালীঘাট রোডের দিকে আসছে। তিনি গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গাড়িটি না থেমে উল্টে সজোরে তাঁর বাইকে এসে ধাক্কা মারে। ছিটকে মাটিতে পড়ে যান প্রবীরবাবু। তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর মোটরবাইকটিও।
পুলিশের দাবি, মোটরবাইকে ধাক্কা মেরেও গাড়িটি থামায়নি আরোহীরা। একই গতিতে তাঁরা পালিয়ে যান। সেই সময় ওখান দিয়ে থানার অন্য একটি গাড়িতে যাচ্ছিলেন সাব ইনস্পেক্টর স্বপন মন্ডল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক জন গ্রিন পুলিশ এবং গাড়ির চালক। পেছনে ধাওয়া করে ওই ইনস্পেক্টর গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে এসএউভি গাড়িটিকে থামতে বাধ্য করেন। এর পরেই গাড়ি থেকে নেমে আসেন এক মহিলা-সহ দুই যুবক। কেন আটকানো হয়েছে, জানতে চান তাঁরা। প্রশ্ন করার মাঝেই তাঁরা পুলিশগাড়িতে ধাক্কা মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। এর পর তাঁদের কাছে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা তা দেখাতে অস্বীকার করেন বলেও পুলিশের অভিযোগ। এর পরে পুলিশকর্মীদের লক্ষ করে গালিগালাজ শুরু করেন তাঁরা। এক পুলিশকর্মী বলেন, “অভিযুক্তরা বিভিন্ন মন্ত্রী এবং পুলিশের শীর্ষকর্তাদের নাম করে কতব্যরতদের হুমকি দেন। বলেন, তুই কেন, তোর বাপ এলেও আমাদের গ্রেফতার করতে পারবে না।” অভিযোগ, এর পরেই পুলিশের গাড়ির চালক মোবাইলে ওই অভিযুক্তদের ছবি তুলতে গেলে শর্মিষ্ঠা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁর মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে রাস্তায় আছড়ে ফেলে ভাঙা হয়। এর পরে ওই চালককে মারতে উদ্যত হলে স্বপনবাবু তাতে বাধা দেন। পুলিশ জানিয়েছে, বচসা চলাকালীন ওই মহিলা স্বপনবাবুকেও মারধর করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালীঘাট থানার অন্য পুলিশকর্মীরা। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশকর্মীদের মারধোর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মধুময়, শর্মিষ্ঠা এবং সুরজিৎকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy