বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পতাকা বা রং না দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিকারিক নিগ্রহ কাণ্ডে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এঁদের মধ্যে দু’জন মহিলাও আছেন। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলুর পদত্যাগ-সহ একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তৃণমূল প্রভাবিত ‘শিক্ষাবন্ধু’ সংগঠনের কর্মীরা। শ’তিনেক লোকের মিছিলে কোনও রাজনৈতিক পতাকা বা ব্যানার না থাকলেও অংশগ্রহণকারীরা বেশির ভাগই তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চড়তে থাকে বিক্ষোভের সুর। অভিযোগ, এই সময়ে প্রথমে পরীক্ষা নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায়ের ঘরে ঢুকে তাঁকে গালিগালাজ করেন বিক্ষোভকারীরা। এর পর সিকিউরিটি ইন-চার্জ প্রতাপকুমার সাঁতরার ঘরে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রতাপবাবুকে মারধর করতে দেখা যায় এক মহিলাকে। ক্যামেরায় ধরাও পড়ে সে ছবি। হাঙ্গামার জেরে নিজের ঘরে ঘণ্টা চারেক ‘বন্দি’ থাকেন উপাচার্য। শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রীর ‘হস্তক্ষেপে’ বন্ধ হয় বিক্ষোভ। ঘটনার নিন্দা করেন রাজ্যপাল।
এর পর বুধবার সমস্যা সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও ‘শিক্ষাবন্ধু’দের কাছ থেকে সংবর্ধনা নেওয়া এবং উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার সময়ে ওই সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। তবে মন্ত্রীর এই সফরের পরই তত্পর হয় পুলিশ। ওই দিন রাতেই গ্রেফতার করা হয় চার অভিযুক্তকে। এদের মধ্যে প্রতাপবাবুকে মারধর করার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যমুনা দিন্দাও রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাকিরা হলেন শেফালি মণ্ডল, হরশীব মণ্ডল এবং কিশোর বাসফোর। যমুনা দিন্দা বাদে বাকি তিন জনকে তাঁদের সংগঠনের কর্মী বলে স্বীকার করেছেন সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সভাপতি দেবব্রত সরকার। তাঁর দাবি, “যমুনা দিন্দার সঙ্গে সংগঠনের কোনও সম্পর্ক নেই। বাকি তিন জন আমাদের সংগঠনের কর্মী। তবে তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হল বুঝতে পারছি না।”
ধৃতদের বিরুদ্ধে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীদের মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ করা হয়। এ দিন তাঁদের কল্যাণী মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ ধৃতদের সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। সাত দিনের জন্য না হলেও চার দিনের জন্য ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy