Advertisement
E-Paper

খোলা ম্যানহোলে ফের শিশুমৃত্যু, প্রশ্নে পুর-নজরদারি

দীর্ঘ দিন ধরে পাড়ার মধ্যে ম্যানহোল খুলে নিকাশি নালার জল দিয়েই চলছিল অবৈধ নির্মাণ। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি জানলেও সতর্কতামূলক একটি নোটিস দিয়েই দায় সেরেছিলেন। তাতে কাজ হল কি না, সে ব্যাপারে আর নজর দেননি। প্রাণ দিয়ে যার মাসুল গুনল বছর দুয়েকের একটি শিশু। সোমবার, গার্ডেনরিচে কলকাতা পুরসভার ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সেই খোলা ম্যানহোলে পড়েই মৃত্যু হল তার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ২১:২০

দীর্ঘ দিন ধরে পাড়ার মধ্যে ম্যানহোল খুলে নিকাশি নালার জল দিয়েই চলছিল অবৈধ নির্মাণ। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর বিষয়টি জানলেও সতর্কতামূলক একটি নোটিস দিয়েই দায় সেরেছিলেন। তাতে কাজ হল কি না, সে ব্যাপারে আর নজর দেননি। প্রাণ দিয়ে যার মাসুল গুনল বছর দুয়েকের একটি শিশু। সোমবার, গার্ডেনরিচে কলকাতা পুরসভার ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সেই খোলা ম্যানহোলে পড়েই মৃত্যু হল তার।

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (ইঞ্জিনিয়ারিং) অতীন ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, “বার বার সতর্ক করেও ম্যানহোল খুলে বাড়ি তৈরির জল নেওয়ার রেওয়াজ বন্ধ করা যায়নি। এলাকার মানুষ সচেতন না হওয়ায় এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল।”

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুটির নাম আরশি পরভিন। গার্ডেনরিচে ফতেপুর ভিলেজ রোডের একটি বাড়িতে বাবা-মা ও দুই ভাই-বোনের সঙ্গে থাকত সে। পুলিশ সূত্রের খবর, মহম্মদ আয়ুব ওরফে মংরু নামে এক প্রোমোটার বেআইনি ভাবেই ওই পাড়ার একটি ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে জল নিত। আরশির মৃত্যুর পরে সোমবার রাতেই ওই প্রোমোটারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে পুরসভার অভিযোগে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা ও শিশুটির পরিবারের অভিযোগে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে মংরু অবশ্য জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়।

কী হয়েছিল সোমবার?

পুলিশ জানায়, ওই দিন বিকেল ৪টে থেকে আরশি নিখোঁজ হয়ে গেলে তার বাবা রাজব আলি গার্ডেনরিচ থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। রাত পর্যন্ত শিশুটির হদিস না মেলায় সন্দেহ বাড়ে পরিবারের। পাড়ার এক বাসিন্দা শেখ রাফিক বলেন, “রাত পর্যন্ত আরশির খোঁজ না পেয়ে শেষে আমরাই ওই ম্যানহোলে দেখার কথা ভাবি।” শানোয়ার আলি নামে এক যুবক বলেন, “টর্চ নিয়ে আমি নীচে নেমেছিলাম। ভিতরে দেখি অর্ধেক জলে ডুবে রয়েছে আরশি। পাড়ার ছেলেদের সাহায্যে ওকে তুলে আনি। বাচ্চাটার তখন জ্ঞান ছিল না। শরীর ঠান্ডা।” খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির দেহ এসএসকেএমে নিয়ে যায়।

অভিযোগ, আরশিদের বাড়ির পাশেই আধ কাঠা জমি কিনে সেখানে অবৈধ ভাবে বাড়ি বানাচ্ছিল মংরু। পাড়ার লোকেরা প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও প্রতি দিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই ম্যানহোল খুলে জল নিয়ে নির্মাণের কাজে ব্যবহার করত সে। পুলিশ সূত্রের খবর, আধ কাঠা জমিতে বাড়ি বানানো যায় না। তা ছাড়া, ম্যানহোল খুলতে গেলে পুরসভার অনুমতি লাগে। মংরুর কাছে তা ছিল না। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, খোলা ম্যানহোলের দিকে নজর রাখারও ব্যবস্থা করেনি সে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও তথা ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীল বিষয়টি জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। তা অস্বীকার করে মঙ্গলবার রঞ্জিতবাবু বলেন, “বিষয়টি জানতে পেরে আমি ওই জমি পর্যবেক্ষণ করতে যাই। তখনই এক বার ধমকে কাজ বন্ধ করিয়ে দিই। তাতে কাজ না হওয়ায় পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে অভিযোগ জানাই। শনিবার পুরসভা থেকে লোক গিয়ে কাজ বন্ধের নোটিস টাঙিয়ে দিয়ে যায়। তা সত্ত্বেও ওই প্রোমোটার কাজ চালিয়ে গিয়েছে।”

manhole uncovered child death gardenrich
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy