Advertisement
E-Paper

তিন রাজ্য জুড়ে ২২ জায়গায় সিবিআই হানা

সারদা-কাণ্ডের তদন্তে নেমে এ বার তিন রাজ্য জুড়ে বৃহস্পতিবার শুধু ২২ জায়গায় তল্লাশি অভিযানই চালাল না সিবিআই, বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ি পর্যন্ত হানা দিল। সেই তালিকায় এমন কয়েক জন রয়েছেন, যাঁরা আবার ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক ও ঘনিষ্ঠ সহচর রেজাউল করিমের বাড়ি এ দিন ছিল সিবিআই অভিযানের তালিকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ২০:১৩

সারদা-কাণ্ডের তদন্তে নেমে এ বার তিন রাজ্য জুড়ে বৃহস্পতিবার শুধু ২২ জায়গায় তল্লাশি অভিযানই চালাল না সিবিআই, বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ি পর্যন্ত হানা দিল। সেই তালিকায় এমন কয়েক জন রয়েছেন, যাঁরা আবার ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত।

রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক ও ঘনিষ্ঠ সহচর রেজাউল করিমের বাড়ি এ দিন ছিল সিবিআই অভিযানের তালিকায়। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ আসিফ খানের পার্ক সার্কাসের বাড়িতেও এ দিন তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। বাদ যাননি প্রাক্তন পুলিশকর্তা দেবেন বিশ্বাসও। এক সময়ের সিপিএম বিধায়ক এই পুলিশকর্তা সারদা থেকে নিয়মিত বেতন নিতেন। সিবিআইয়ের হাতে ধৃত ব্যবসায়ী সন্ধির অগ্রবালের অফিস এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রয়াত কর্তা পল্টু দাসের বাড়ি, ব্যবসায়ী সজ্জন অগ্রবালের অফিস-সহ কলকাতার মোট সাত জায়গায় হানা দেয় সিবিআই।

অসমেও এ দিন অভিযান চালানো হয়েছে প্রভাবশালীদের বাড়িতে। সে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী অঞ্জন দত্ত, প্রাক্তন পুলিশকর্তা শঙ্কর বরুয়া এবং গায়ক সদানন্দ গগৈয়ের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। গুয়াহাটিতে আরও ৯ জায়গায় হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। অসমের ধুবুড়িতে দু’টি জায়গায় ও মুম্বইয়ে একটি জায়গায় হানা দিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এক শীর্ষকর্তার ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে এমন তল্লাশি আরও বাড়ানো হবে। তদন্তে সহযোগিতা না করলে গ্রেফতারও করা হতে পারে।

সিবিআই সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের সাতটি দল কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। সকাল আটটার সময় ব্যাঙ্ককর্মী পরিচয় দিয়ে মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক রেজাউল ওরফে বাপির বাড়িতে হানা দেন সিবিআই অফিসারেরা। মূলত বাপির বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথি ও আর্থিক বিনিয়োগের কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাপিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এ দিনই তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়। বেলা আড়াইটে নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই অফিসে হাজির হন বাপি। এ দিন সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ সিবিআই দফতর থেকে বেরোন বাপি।

সিবিআই সূত্রের খবর, আমহার্স্ট স্ট্রিট লাগোয়া সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কর্তা পল্টু দাসের বাড়িতেও এ দিন সকালে হানা দেয় সিবিআই। জানা গিয়েছে, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুর আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে পল্টু দাসের বাড়ি থেকে। পাশাপাশি পল্টুবাবুর স্ত্রী রীনা দাসের দু’টি ফিক্সড ডিপোজিট-সহ কিছু আর্থিক বিনিয়োগের কাগজপত্রও গোয়েন্দারা জমা নিয়েছেন।

গত সোমবারই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ এবং কলম নামে একটি কাগজের শীর্ষকর্তা আহমেদ হাসান ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। এ দিন হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর এলাকার নরসিংহ বসু লেনে একটি বহুতলে হানা দেয় চার সদস্যের সিবিআই দল। গোয়েন্দারা জানান, ওই বহুতলের তিন তলায় রাজেশ শরাফ নামে এক পর্যটন ব্যবসায়ী থাকেন। তাঁর সংস্থার সঙ্গে সারদার পর্যটন ব্যবসার যোগ ছিল বলেই তদন্তকারীদের দাবি। এ দিন শহরের শিল্পপতি বিপিন ভোরার বাড়িতেও সিবিআইয়ের দল গিয়েছিল। তবে সিবিআই সূত্রের খবর, বিপিনবাবুর বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে সারদা তদন্তের কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগের তদন্তে এ দিন ওই শিল্পপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ সিবিআই হানাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আমরাই দুই বছর আগে চিট ফান্ডগুলির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গ বরং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে বাধ্য হয়ে সিবিআই তদন্ত করায়। ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি বহু মানুষকে ঠকিয়েছে। তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। দোষীদের খুঁজে বের করুক সিবিআই।”

sarada scam cbi raids kolkata guwahati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy