Advertisement
E-Paper

তুষার ধসে আটকদের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৪ ১৭:০২
তুষার ধসে আটকে পড়া এক পর্বতারোহীকে বার করে আনছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। ছবি: এফপি।

তুষার ধসে আটকে পড়া এক পর্বতারোহীকে বার করে আনছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। ছবি: এফপি।

চার নিখোঁজ শেরপার খোঁজে শনিবারেও তল্লাশি অভিযান জারি রাখল নেপালের পর্যটন মন্ত্রক। শুক্রবারের তুষার ধস ইতিমধ্যেই কেড়ে নিয়েছে ১৩টি প্রাণ। সাড়ে চারশো পর্বতারোহীর মধ্যে আহত অনেকেই। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে আবার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। শুক্রবারের দুর্ঘটনার রেশ কাটাতে চার দিনের বিশ্রামের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক পর্বতারোহী। আবার কয়েক জন মনে করছেন অভিজ্ঞ নেপালি শেরপাদের পরামর্শ নিয়েই লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যাবেন।

‘পিক ফ্রিক এক্সপিডিশন’ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত পর্বতারোহী টিম রিপেল তাঁর ব্লগে ওই দিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। ‘‘ভয়াবহ তুষার ধস লণ্ডভণ্ড করে দিল সব। নিমেষের মধ্যে বদলে গেল চারপাশের চেনা ছবি। বসে বসে শুধু দেখলাম ১৩টি হেলিকপ্টার এসে নিথর দেহগুলি লাইন দিয়ে বেস ক্যাম্পে নিয়ে চলে গেল। ভয়ে ও আতঙ্কে সবাই থরহরিকম্প। কয়েক জন আরোহী ফিরে যাওয়ার জন্য রীতিমতো গোছগাছ শুরু করে দিয়েছেন। নীরব দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া তখন আর কোনও উপায় নেই।’’

এভারেস্টের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা খুম্বু আইসফল। এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী স্যর এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে ১৯৫৩ সালে প্রথম সাউথ কল যাওয়ার রাস্তাটির নির্দেশিকা দেন। এই পথে যাওয়ার প্রধান বাধা হল থুম্বু আইসফল। চলমান এই বরফের নদী পেরোতে গিয়ে কখন যে মাথার উপর ভেঙে পড়বে লক্ষ লক্ষ টন ওজনের বরফের চাঁই তা কারও জানা নেই। বিপদ ঘনিয়ে আসবে অযাচিতভাবেই, জানালেন ক্যালিফোর্নিয়ার নামজাদা পর্বতারোহী অ্যাড্রিয়ান বালিঞ্জার। ‘করিডর অফ ক্যালামিটি’— নিজস্ব ব্লগে এ ভাবেই খুম্বু আইসফলকে বর্ণনা করেছেন তিনি। শুক্রবার ভোর ছ’টা নাগাদ এই আইসফলের কাছেই বেস ক্যাম্প-১ থেকে যাত্রা শুরু করেন পর্বতারোহীরা। আকাশ পরিষ্কার দেখে মালপত্র বেঁধে ক্যাম্প-১ থেকে আইসফল পেরিয়ে ক্যাম্প-২-এ যাওয়ার পথেই আচমকা নেমে আসে বরফের স্রোত। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বরফের চাদরের তলায় তলিয়ে যান ১৩ জন শেরপা।

মৃত শেরপাদের আত্মীয়েরা। ছবি: এএফপি ও রয়টার্স।

নেপালের একটি ট্রেকিং এজেন্সি এ দিন জানায়, তাদের ছ’জন শেরপা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এই এজেন্সির অন্যতম সদস্য ভীম রাজ পডেল এ দিন জানান, উদ্ধারকার্যের পরেই এই অভিযানকে সফল করতে পরবর্তী চিন্তাভাবনা করা হবে। ইতিমধ্যেই ১০০ জন পর্বতারোহী তাঁদের শেরপাদের নিয়ে খুম্বু আইসফল পার হয়ে সাউথ সামিটের দিকে যাত্রা শুরু করে দিয়েছেন। ‘হিমালয়ান রেসকিউ অ্যাসোশিয়েশন’-র সদস্য লাকপা শেরপা একটি সংবাদ সংস্থাকে জানান, শনিবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বেস ক্যাম্প থেকে একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে। তল্লাশিতে সাহায্য করার জন্য রয়েছে সেনা হেলিকপ্টারও।

এরই পাশাপাশি অন্য ছবিও আছে। চোখের জল মুছে তেনজি শেরপার ভাগ্নী ফিঞ্জুম শেরপা এ দিন একটি সংবাদ সংস্থাকে বললেন ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। জানি না এখন সংসার চলবে কেমন করে। আমাদের দেখাশোনার করার আর কেউ রইল না।’ কাকার দেহ আদৌ ফিরবে কী না জানা নেই তাঁর। ‘সরকার নিহতদের পরিবারের জন্য কিছুই করছেন না’, ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অপর এক জন। ১৩ জন নিহতের তালিকায় রয়েছে তাঁর ভাইয়ের নামও। সরকারের ঘোষণা করা ক্ষতিপূরণে সন্তুষ্ট নন তাঁরা কেউই। তিনি জানান, শেরপারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পর্বতারোহীদের পথ দেখান। কিন্তু শেরপাদের পরিবারের কথা ভাবে না কেউই।

everest expedition everest trajedy avalanche
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy