Advertisement
E-Paper

দেড় বছরের ছেলের মুণ্ড কেটে খুন, অভিযুক্ত বাবা

স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জেরে দেড় বছরের শিশুপুত্রের ধড়-মুণ্ড আলাদা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। শনিবার ভোরে খড়্গপুরের নিমপুরা চুনাবস্তি থেকে আড়াইশো মিটার দূরে, আর্য বিদ্যাপীঠের মাঠে বিকাশ রাণা নামে দেড় বছরের ওই শিশুর মুণ্ডহীন দেহ পাওয়া যায়। চুনাবস্তির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ওরফে বিশু এবং বর্ণিতা রাণার ছোট ছেলে বিকাশ। ওই দম্পতির তিন বছরের দুই যমজ ছেলেও আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ২১:৩৮

স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জেরে দেড় বছরের শিশুপুত্রের ধড়-মুণ্ড আলাদা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। শনিবার ভোরে খড়্গপুরের নিমপুরা চুনাবস্তি থেকে আড়াইশো মিটার দূরে, আর্য বিদ্যাপীঠের মাঠে বিকাশ রাণা নামে দেড় বছরের ওই শিশুর মুণ্ডহীন দেহ পাওয়া যায়।

চুনাবস্তির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ওরফে বিশু এবং বর্ণিতা রাণার ছোট ছেলে বিকাশ। ওই দম্পতির তিন বছরের দুই যমজ ছেলেও আছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ছোট ছেলে তার ঔরসজাত নয় বলে অভিযোগ করত বিশ্বজিৎ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “এই ঘটনা পারিবারিক অশান্তির পরিণতি। অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।”

খড়্গপুর টাউন থানায় দায়ের করা অভিযোগে বর্ণিতা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে বিশ্বজিৎ ছোট ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। শনিবার রাত পর্যন্ত বিশ্বজিতের খোঁজ পায়নি পুলিশ। পাওয়া যায়নি বিকাশের মুণ্ডও। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ভোরে ছেলের কাটা মুণ্ড ব্যাগে ভরে মালঞ্চের রাখাজঙ্গল এলাকায় মামা অজিত রাণার বাড়িতে গিয়েছিল বিশ্বজিৎ। অজিতবাবু পুলিশকে জানান, বিশ্বজিৎ তাঁর কাছে ছেলেকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু তিনি পুলিশে খবর দেওয়ার কথা বলতেই চম্পট দেয় সে।

পেশায় গাড়িচালক বছর পঁয়ত্রিশের বিশ্বজিৎ আগেও বিয়ে করেছিল। বছর পাঁচেক আগে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে খড়্গপুরে পরিচারিকার কাজে যুক্ত নয়াগ্রামের খড়িকার বাসিন্দা বর্ণিতার সঙ্গে বিশ্বজিতের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। বর্ণিতা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরাই দু’জনের বিয়ে দেন। বছর তিনেক আগে ছোটন ও বুবাই নামে যমজ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন বর্ণিতা। বছর দেড়েক আগে জন্মায় বিকাশ। বর্ণিতার দাবি, বিয়ের পর থেকেই কাজে মন ছিল না বিশ্বজিতের। নিয়মিত নেশা করত। আর নেশার জন্য টাকা চেয়ে তাঁকে মারধর করত। বর্ণিতার মায়ের পাঠানো টাকায় সংসার চলত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিকাশ জন্মানোর পরে বর্ণিতার উপরে বিশ্বজিতের অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে। বর্ণিতার কথায়, “আমার সঙ্গে অন্য পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে বলে মিথ্যা সন্দেহ করত আমার স্বামী।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার দাবিমতো নেশার টাকা না পেয়ে বাড়ি থেকে চলে যায় বিশ্বজিৎ। সঙ্গে নিয়ে যায় নতুন কেনা বঁটি। বর্ণিতা বলেন, “যাওয়ার সময় বিশু হুমকি দিয়ে গিয়েছিল, আমাদের সবাইকে কেটে ফেলবে। ছোট ছেলেটাকে কেটেই ফেলল ও!”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোর ৩টে নাগাদ বাড়িতে ঢুকে বিশু বিকাশকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। বিকাশের কান্না শুনে জেগে উঠে স্বামীকে বাধা দেন বর্ণিতা। বধূটির কথায়, “স্বামী কোনও কথা শোনেনি। ওরা দাবিমতো নেশা করার টাকা না দিলে শ্মশান থেকে ছেলেকে আনতে হবে বলে ফের হুমকি দেয়।” নাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন খড়্গপুরে এসেছিলেন বর্ণিতার মা অলোকা কালিন্দি। কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, “জামাইয়ের যেন কড়া শাস্তি হয়।” পুত্রহারা বর্ণিতারও বক্তব্য, “আমি স্বামীর ফাঁসি চাই।”

kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy