Advertisement
E-Paper

বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচন শান্তিতেই

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ থাকলেও মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হল বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তেমন কোনও বড় অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। উপনির্বাচনের স্বাভাবিক প্রবণতাকে উড়িয়ে দিয়ে দুই কেন্দ্রেই বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে ভোট পড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৫৫
চলছে ভোটগ্রহণ। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের ভাণ্ডারখোলা এলাকায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

চলছে ভোটগ্রহণ। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের ভাণ্ডারখোলা এলাকায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ থাকলেও মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হল বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তেমন কোনও বড় অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। উপনির্বাচনের স্বাভাবিক প্রবণতাকে উড়িয়ে দিয়ে দুই কেন্দ্রেই বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে ভোট পড়েছে।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গয়েশপুর থেকে। শাসক দলের বিরুদ্ধে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ভোট লুঠের অভিযোগ করেছে বিজেপি। কয়েকটি বুথে বিজেপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে গয়েশপুরে কিছু ক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি সমর্থকেরা। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে শেষে।

সারদা কাণ্ডে জর্জরিত শাসকদলের কাছে এই দুই কেন্দ্রের নির্বাচন অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো রয়েছে তৃণমূলের অন্তর্কলহ। তাই এই দু’টি কেন্দ্রই নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া তৃণমূল। পাল্টা লড়াই দিতে মাঠে নামে বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি। বনগাঁ উপনির্বাচনের ঠিক আগে দল ছেড়ে বিজেপি-র প্রার্থী হন তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছেলে সুব্রত ঠাকুর। তৃণমূল যদিও ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুরকে পাল্টা প্রার্থী করে। এর পর থেকে ক্রমেই বড় হয়ে ওঠে ঠাকুরবাড়ির ফাটল, প্রকাশ্যে আসে পারিবারিক কোন্দল। ভোটের সকালেও বাদ যায়নি সেই কাদা ছোড়াছুড়ি। এবং এ বারেও কোন্দল বড়মা বীণাপানিদেবীকে নিয়ে। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর নাতি সুব্রতকে সমর্থন না করে মমতাবালাকেই ‘আশীর্বাদ’ করেন বড়মা। এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড়মাকে ‘গুম’ করার অভিযোগ করেছেন মঞ্জুলকৃষ্ণ এবং সুব্রত। প্রাক্তন মন্ত্রীর অভিযোগ, “ভাবতেই পারিনি মা-কে নিয়ে ওরা চলে যাবে। কারসাজি করে ৯৬ বছরের এক বৃদ্ধাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছে তৃণমূলের গুন্ডারা।” তাঁর দাবি, “মতুয়ারাই এর জবাব দেবে।” একই অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী তথা মঞ্জুলকৃষ্ণের ছেলে সুব্রত ঠাকুরও। তবে এই অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বীণাপানিদেবী নিজে বুথে গিয়ে ভোট দিয়েছেন বলে খবর।

এ দিন নির্বাচন শেষে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “কল্যাণী এবং গয়েশপুরে তৃণমূল ঐতিহ্য বজায় রেখে ভোট লুঠ করার চেষ্টা করেছে। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার ১২টি বুথে বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়েছে। এ ছাড়া বাকি সব জায়গায় ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে।” যদিও গোটা ঘটনার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন রাহুলবাবু। পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। কল্যাণী থানার আইসি তুষারকান্তি কর এবং কল্যাণী-হরিণঘাটার দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষক অজয় সিংহ গাঙ্গোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে বিজেপি-র তরফে। প্রথম জনের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করা এবং দ্বিতীয় জন কাজের সময় মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখায় এই অভিযোগ জানানো হবে বলে রাহুলবাবু জানিয়েছেন।

এ দিনের ভোট অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বিরোধীদের কুত্সা এবং গন্ডগোলের চেষ্টাকে উপেক্ষা করে মানুষ অবাধে ভোট দিয়েছেন।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, “উপনির্বাচনে শতাংশের হিসেবে ভোট পড়ার হার যদি বেড়ে থাকে তা হলে বলতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে থাকা আইনশৃঙ্খলার এতটাই উন্নতি হয়েছে যে, উপনির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া যাবে এই আস্থাতেই মানুষ ভোট দিয়েছেন।”

bangaon byelection krishnagunj byelection mamatabala thakur subrata thakur bjp tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy