Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বাদ সাধল প্রকৃতি, আপাতত বন্ধ নিখোঁজ বিমান সন্ধানের কাজ

খারাপ আবহাওয়ার জন্য আপাতত মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমান ৩৭০-এর খোঁজ বন্ধ রাখল ‘অস্ট্রেলীয়ান ম্যারিটাইম সেফটি অথরিটি’ (এএমএসএ)। ফলে এখনও নিখোঁজ বিমানের কোনও ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জানা যায়নি কেন বিমানটি নিখোঁজ হল। মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রেজাক সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, নিখোঁজ বিমানটি ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে ভেঙে পড়েছে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৪ ২০:৪২
Share: Save:

খারাপ আবহাওয়ার জন্য আপাতত মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ বিমান ৩৭০-এর খোঁজ বন্ধ রাখল ‘অস্ট্রেলীয়ান ম্যারিটাইম সেফটি অথরিটি’ (এএমএসএ)। ফলে এখনও নিখোঁজ বিমানের কোনও ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জানা যায়নি কেন বিমানটি নিখোঁজ হল।

মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব রেজাক সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, নিখোঁজ বিমানটি ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে ভেঙে পড়েছে। নিখোঁজ বিমানটি থেকে উপগ্রহে পাঠানো বার্তা বিশ্লেষণ করে ব্রিটেনের ইম্যারস্যাট সংস্থা বিমানটি ভেঙে পড়ার জায়গাটি মোটামুটি ভাবে চিহ্নিত করেছে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। এর পরে ওই অঞ্চলে তল্লাশি অভিযান আরও জোরদার করা হয়। অস্ট্রেলিয়া, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা, জাপান এক সঙ্গে এই অভিযান চালাচ্ছে। সোমবার মালয়েশীয় প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, কয়েক ঘণ্টা বা মঙ্গলবার সকালের মধ্যে ওই অঞ্চলে ভাসমান কয়েকটি বস্তু উদ্ধার করা সম্ভব হবে। অস্ট্রেলীয় উদ্ধারকারী জাহাজ সেই লক্ষ্যে এগিয়েও যাচ্ছিল। কিন্তু বাদ সাধে প্রকৃতি।

অস্ট্রেলীয় প্রশাসনের তরফে জানান হয়েছে, উপগ্রহের তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজ চালানো হচ্ছে। কোনও ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে তা উদ্ধার করে সেটি ওই নিখোঁজ বিমানের কি না তা মিলিয়ে দেখা হবে। তবেই দুর্ঘটনার স্থলটি ঠিক ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। তবে উপগ্রহের তথ্য পেলেও এখন খোঁজার জায়গাটি বিশাল। তা ছাড়া অস্ট্রলিয়ার পারথ শহরের প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের এই অঞ্চলটি এমনিতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ। প্রবল ঠাণ্ডা আর ঝোড়ো হাওয়ার জন্য অঞ্চলটিকে ‘রোয়ারিং ফরটিস’ বলা হয়।

এএমএসএ-র তরফে জানান হয়েছে, ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মেঘ নিচুতে নেমে এসেছে। ফলে উদ্ধারকারী বিমানের পক্ষে ওড়া সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া ওখানে প্রায় কুড়ি ফুট উঁচু ঢেউ উঠছে। ফলে নৌবাহিনীর পক্ষেও আপাতত ওখানে পৌঁছনো সম্ভব নয়। তবে আগামী কালের মধ্যে আবহওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহওয়ার উন্নতি হলেই আবার জোরকদমে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে। ইম্যারস্যাটও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জায়গাটি চিহ্নিত করার জন্য উপগ্রহ তথ্যের আরও বিশ্লেষণ করছে। আমেরিকার প্রশাসনের তরফে খোঁজে সাহায্যের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্ল্যাকবক্স ডিটেক্টর-এর পাশাপাশি সাগরের তলায় চলে এমন দ্রোন পাঠানোর কথা জানান হয়েছে। বিমানটির ব্ল্যাকবক্স খুঁজে পেলে তা বিশ্লেষণ করে এই নিখোঁজ রহস্যের প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সাধারণত ব্ল্যাকবক্স থেকে ৩০ দিন সঙ্কেত পাওয়া যায়। ফলে হাতে আরও ১৩ দিন রয়ে গিয়েছে।

এ দিকে বেজিং-এ বিমানযাত্রীদের পরিবার মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে বিক্ষোভে ফেটে পরে। মালয়েশীয় প্রশাসন তাঁদের ঠিকমতো তথ্য সরবরাহ করছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। মালয়েশীয় সরকার, এয়ারলাইন্স ও সেনাবাহিনী তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা বেজিং-এর মালয়েশীয় দূতাবাসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করে। চিনের প্রশাসনও মালয়েশিয়ার হাতে থাকা উপগ্রহের তথ্য অবিলম্বে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেছে। অন্য দিকে, অস্ট্রেলীয় প্রশাসন জানিয়েছে, নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের কেউ এই সন্ধানস্থলে আসতে চাইলে তাঁদের বিনা খরচে ভিসার ব্যবস্থা করা হবে। নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের কেউ সন্ধানস্থলে যেতে চাইলে বিনা খরচে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশীয় এয়ারলাইন্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

missing flight malaysia airlines boeing 777
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE