সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশে জমায়েত। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
রাজ্য সম্মেলনের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে রাজ্যে এ বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিল সিপিএম। রবিবার ব্রিগেডের ভরা ময়দান থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট, রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সাংসদ মহম্মদ সেলিম এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য— সকলেরই মূল আহ্বান প্রতিবাদ থেকে এ বার প্রতিরোধের পথে যেতে হবে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং বিরোধী শক্তি হিসাবে দ্রুত উঠে আসা বিজেপি— এই দু’পক্ষের মোকাবিলা করেই তাদেরকে এগোতে হবে, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
ব্রিগেডের ময়দানে এ দিন ভিড় হয়েছিল ভালই। ভাড়া করা বাস এবং গাড়ি ছাড়াও সাধারণ বাসে, ট্রেনে মূলত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকে বহু মানুষ সমাগমে এসেছিলেন। তবে সমাবেশের ভিড় দেখে এ বার বিশেষ উচ্ছ্বাস দেখাতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। গত বছরেও লোকসভা ভোটের আগে বামফ্রন্টের ব্রিগেডে লোক উপচে পড়েছিল। কিন্তু লোকসভা ভোট সহ-নানা উপনির্বাচনে সেই ভিড়ের কোনও প্রভাব বামেদের ভোটবাক্সে পড়েনি।তাই বাড়তি উচ্ছ্বাস না দেখিয়েই এ দিনের ভিড়কে শুধু সমালোচনার জবাব হিসাবে ব্যবহার করেছেন সিপিএম নেতারা। রাজ্যসভা ও লোকসভার দুই সাংসদ ইয়েচুরি এবং সেলিম দু’জনেই বলেছেন, “যাঁরা বলছিলেন পশ্চিমবঙ্গে লাল ঝান্ডা বলে আর কিছু নেই, এই জমায়েতই তাঁদের জবাব।”
বহু দিন পরে এ বারের ব্রিগেডে আর মুখ্য বক্তা হিসাবে ছিলেন না বুদ্ধদেববাবু। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বরং ছিলেন সভাপতির দায়িত্বে। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেছেন, “এক দিকে একটা দল রাজ্যটাকে নরক কুণ্ডে পরিণত করেছে। অপরাধীদের সরকার চলছে। আর এক দিকে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের নেতৃত্বে পুঁজিপতি এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির হিংস্র আক্রমণ চলছে। আমাদের শক্তি বাড়াতে হবে। এই শক্তির বিরুদ্ধে গ্রামে-গঞ্জে লড়াই গড়ে তুলতে হবে।” পাশাপাশি, বুদ্ধদেববাবুর আরও মন্তব্য, “কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম বলছে বামের জমি রামকে ছেড়ে দাও। এঁদের রাম মানে তো নাথুরাম। নাথুরাম গডসেদের কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করতে পারিনা।”
সমাবেশের শেষ বক্তা ছিলেন সূর্যকান্তবাবু। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, “আপনাদের ঝান্ডার সঙ্গে ডান্ডাগুলোকে আরও শক্ত করুন। শপথ নিন আগামী পুরভোটে একটা বুথও দখল করতে দেব না। দরকারে রক্ত দিয়ে বুথ আগলাবো। এলাকায় ফিরে গিয়ে এই শপথই আপনাদের ছড়িয়ে দিতে হবে।”
সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশে প্রথা অনুযায়ী শেষ বক্তাকেই ‘মুখ্য আকর্ষণ’ হিসাবে ধরা হয়। বিরোধী দলনেতাকে এ দিন যে ভাবে সেই মর্যাদা দেওয়া হল তাতে এ বারের সম্মেলনে দলের নেতৃত্বের ব্যাটন বদলনোর ইঙ্গিতই দেখচে পাচ্ছেন অনেকে। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সোমবার থেকে সিপিএমের ২৪তম রাজ্য সম্মেলন শুরু হচ্ছে। চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy