সিনজারে ত্রাণসামগ্রী ফেলার আগে শেষ মুহূর্তের পরীক্ষা মার্কিন সেনার। রবিবার রয়টার্স-এর তোলা ছবি।
ইরাকে তৃতীয় বার বিমান হানা চালাল আমেরিকা। সঙ্গে ফেলা হল ত্রাণসামগ্রীও। এ বার আমেরিকার সঙ্গে ত্রাণের কাজে যোগ দিল ব্রিটেনও। ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্স (র্যাফ) বিমান থেকে এ দিন ত্রাণ নামে। কিন্তু এতেও সিনজারে আটকে থাকা ৫৬ জন ইয়াজিদি শিশুর প্রাণ রক্ষা হয়নি।
অন্য দিকে ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এই হামলা দ্রুত শেষ হবে না বলে শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে সীমিত হামালই চালানো হবে বলে তিনি জানান। এই হামলার মূল লক্ষ্য ইরাকের উত্তর দিকে আইএস জঙ্গিদের অগ্রগতি আটকানো। পাশাপাশি সিনজার পর্বতে আটকে পড়া ইয়াজিদি সম্প্রদায়কে জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচানো।
শনিবার রাতে তৃতীয় হামলায় আইএস জঙ্গিদের সাঁজোয়া গাড়ির উপরে আঘাত হানে মার্কিন বিমান ও ড্রোন। ওই গাড়ি থেকেই ইয়াজিদিদের উপরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রাণভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে ইয়াজিদিরা। সঙ্গে নিজেদের সহায়, সম্বলটুকুও নিতে পারেননি অনেকে। খিদে-তৃষ্ণায় কাতর। বিশেষ করে শিশুদের অবস্থা খুবই খারাপ। রাষ্ট্রপুঞ্জ সূত্রে খবর, সিনজার পর্বতে আটকে থাকা ৫৬ জন ইয়াজিদি শিশুর ডিহাইড্রেশনে মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে সিনজার পর্বতের উত্তরে আটকে থাকা ইয়াজিদিরা পালানোর পথ পেলেও পর্বতের দক্ষিণ দিকে আটকে থাকা ইয়াজিদিদের অবস্থা চরম সঙ্কটে।
তাই জঙ্গি দমনের পাশাপাশি ইয়াজিদিদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী ফেলার কাজ চালাচ্ছে আমেরিকা। শনিবার তৃতীয় বারের জন্য ত্রাণ সামগ্রী ফেলা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৫২ হাজার প্যাকেট মিলিটারি র্যাশন ফেলা হয়েছে। ত্রাণ কাজে ফ্রান্সও অংশ নিতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
এ দিকে আইএস জঙ্গিরা মসুলের উত্তরে ইরাকের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু করার চেষ্টা করছে। এ দিন বাঁধের উপর আইএস-এর পতাকা হাতে হেঁটে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করেছে জঙ্গিরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, চার দিন আগে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে মসুল শহরের সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। আইএস জঙ্গিরা শনিবার ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে এসে সেই সংযোগ পুনঃস্থাপন করে। পাশাপাশি কেন্দ্রটি ঠিকমতো চালানোর জন্য লোক একত্রিত করা হচ্ছে। এ ক’দিনে কুর্দদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রধান শহর আরবিলের অনেকটাই কাছে এগিয়ে গিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরবিল থেকে গাড়িতে ৩০ মিনিট দূরত্বে এখন তাদের অবস্থান। এ সময়ে কুর্দ পেশমেরগা যোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য বাগদাদ থেকে ইরাক সরকার ভারী অস্ত্র পাঠিয়েছে। অন্য দেশ থেকেও তাদের কাছে অস্ত্র আসছে বলে কুর্দ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু আসন্ন আক্রমণের ভয়ে তেল খনিতে কাজ করা বিদেশী কর্মীরা শহর ছাড়তে শুরু করেছেন। সাধারণ শহরবাসী প্রাণ রক্ষার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছেন বলে জানা গিয়েছে। ফলে খোলা বাজারে একে ৪৭-এর মতো অস্ত্র দেদার বিকোচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy