Advertisement
E-Paper

হামাসের তিন জঙ্গি কমান্ডারকে হত্যা করল ইজরায়েল

হামাসের জঙ্গি বিভাগের (কোয়াসেম ব্রিগেড) তিন উচ্চপদস্থ কমান্ডারকে হত্যা করল ইজরায়েল। বৃহস্পতিবার গাজার দক্ষিণে রাফায় ইজরায়েল এই হামলা চালায়। মহম্মদ আবু শাম্মালা, রায়েদ আল-আত্তার এবং মহম্মদ বারহোউম হামাসের এই তিন কমান্ডার দীর্ঘ দিন ধরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কাজে যুক্ত ছিলেন বলে ইজরায়েল জানিয়েছে। তবে বুধবারের হামলার পরেও হামাসের সেনা বিভাগের কর্তা মহম্মদ দেইফ অক্ষত আছেন বলে জানা গিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৪ ১৯:৪৪
ইজরায়েলি হামলায় এই বাড়িতেই প্রাণ হারান হামাস নেতারা।

ইজরায়েলি হামলায় এই বাড়িতেই প্রাণ হারান হামাস নেতারা।

হামাসের জঙ্গি বিভাগের (কোয়াসেম ব্রিগেড) তিন উচ্চপদস্থ কমান্ডারকে হত্যা করল ইজরায়েল। বৃহস্পতিবার গাজার দক্ষিণে রাফায় ইজরায়েল এই হামলা চালায়। মহম্মদ আবু শাম্মালা, রায়েদ আল-আত্তার এবং মহম্মদ বারহোউম হামাসের এই তিন কমান্ডার দীর্ঘ দিন ধরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কাজে যুক্ত ছিলেন বলে ইজরায়েল জানিয়েছে। তবে বুধবারের হামলার পরেও হামাসের সেনা বিভাগের কর্তা মহম্মদ দেইফ অক্ষত আছেন বলে জানা গিয়েছে।

গাজা থেকে রকেট আক্রমণ বন্ধ করার জন্য ৮ জুলাই থেকে ‘অপারেশন প্রোটেকটিভ এজ’ শুরু করে। এই অপারেশনে এখন পর্যন্ত এটাই ইজরায়েলের বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। ইজরায়েলি সেনা ও দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা সিন বেট সূত্রে খবর, তিন কমান্ডারকে লক্ষ্য করেই বিমান হামলা করা হয়েছিল। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই কাজের জন্য ইজরায়েলি সেনা ও সিন বেটকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই আক্রমণকে অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করে হামাসের পক্ষে থেকে জানান হয়েছে, লড়াই চলবে। ইজরায়েলকে এর ফল ভুগতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে হামাস।

সিন বেট সূত্রে খবর, আবু শাম্মালা গাজার দক্ষিণে হামাসের কমান্ডার। রায়েদ আল-আত্তার রাফায় হামাসের দায়িত্বে ছিলেন। ‘অপারেশন প্রোটেকটিভ এজ’ দক্ষিণ গাজায় সবচেয়ে ঘোরতর সংঘর্ষ হয়েছিল। আর মহম্মদ বারহোউম হামাসের মুখপাত্র ফাওজি বারহোউমের আত্মীয়। তিনিই হামাসের স্থানীয় কমান্ডের দায়িত্ব সামলাতেন। ২০০৬-এ ইজরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতকে অপহরণ করা হয়। পাঁচ বছর পরে এক হাজার প্যালেস্তাইনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে তাঁকে ছেড়ে দেয় হামাস। রায়েদ আল-আত্তার সেই অপহরণের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে ইজরায়েলের অভিযোগ। মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের হাতে গিলাদকে তুলে দিতে আল-আত্তারই গিয়েছিলেন। এই অপহরণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আবু শাম্মালাও। তা ছাড়া সুড়ঙ্গ খোঁড়া, অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গেও এঁরা যুক্ত ছিলেন বলে ইজরায়েল জানিয়েছে।

গাজার একটি আদালতে (বাঁ দিক থেকে) রায়েদ আল-আত্তার
ও মহম্মদ আবু শাম্মালা। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯।

ইজরায়েলের মূল লক্ষ্য গাজাকে অস্ত্রমুক্ত করা। সে ক্ষেত্রে হামাসের কোয়াসিম ব্রিগেড বড় বাধা। কোয়াসিম ব্রিগেডের নেতাদের হত্যা করে সেই লক্ষের দিকেই এগোচ্ছে ইজরায়েল। বুধবার রাতে ইজরায়েল গাজায় ২০টি আক্রমণ চালায়। শেষ যুদ্ধবিরতির পরে হামাস ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে এ পর্যন্ত ২১৩টি রকেট ছুঁড়েছে। এর মধ্যে ১৬২টি ইজরায়েলে আছড়ে পড়ে। ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্রধ্বংসী ‘আয়রন ডোম’ ধ্বংস করে। ১৬টি ইজরায়েলে পৌঁছয়ইনি। দক্ষিণ ইজরায়েলে গাজার সীমান্তের কাছে নির ওজে ১২টি রকেট আছড়ে পড়ে। এতে এক ইজরায়েলি গুরুতর আহত হয়েছেন। ইজরায়েলি হানায় দক্ষিণ গাজায় একটি চারতলা বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেখানে এখন উদ্ধার কাজ চলছে। এখনও হতাহতের কোনও সংবাদ পাওয়া যায়নি। নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২২ জন প্যালেস্তাইনির প্রাণ গিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২০১৩ জন প্যালেস্তাইনি।

এ দিকে হামাস তেল আভিভে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থাগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে। হামাসের আক্রমণের ভয়ে আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) এর আগে দু’দিন ইজরায়েলে বিমান চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এই অবস্থায় শান্তির সম্ভাবনা সুদূরপরাহত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কায়রো থেকে প্যালেস্তাইনের প্রতিনিধিরাও ফিরে এসেছেন। যদিও মিশর এখন দু’পক্ষের সঙ্গেই পরোক্ষে যোগাযোগ বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, দক্ষিণ ইজরায়লকে নিরাপদ না-করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। তিনি বলেন, “আমাদের নীতি খুব সরল। তুমি যদি আঘাত কর, আমরা আক্রমণ করব। তুমি আরও আঘাত করলে আমরা দ্বিগুণ আক্রমণ করব।”

ছবি: রয়টার্স।

israel hamas raed al-Attar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy