Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

মঞ্চে দাঁড়িয়ে কীর্তি, বিজেপিকে ‘বহিরাগত’ আক্রমণ অভিষেকের

সভায় বিজেপিকে বিঁধে অভিষেক বলেন, ‘‘যে এখানে থাকে না, যে বাংলার ভাষা বোঝে না, কৃষ্টি-সংস্কৃতি জানে না, দু’হাজার কিলোমিটার দূরে থাকে, সে আপনাকে গ্যারান্টি দেবে?’’

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৬:২১
Share: Save:

নিশানায় যখন বিরোধীরা, অস্ত্র তখন ‘বহিরাগত’। আর যখন ভিন্ রাজ্য থেকে আসা দলীয় প্রার্থীদের সম্পর্কে চর্চা শুরু হয়? তখন তাঁরা ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক’।

কীর্তি আজাদ এবং ইউসুফ পাঠানের হয়ে প্রচারে এই যুক্তিও দেখাচ্ছে তৃণমূল। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় সভা করতে এসে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রায় একই কথা বললেন। তিনি যখন বিজেপিকে ‘বহিরাগত’, ‘বাংলা বিরোধী’ তকমায় বিঁধছিলেন, মঞ্চে তাঁর পাশে তখন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। নিজেদের ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা প্রার্থী সম্পর্কে এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘ভোট কোনও ব্যক্তিকে নয়, ভোট দেবেন বাংলা বিরোধীদের বিরুদ্ধে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করার জন্য।’’

সভায় বিজেপিকে বিঁধে অভিষেক বলেন, ‘‘যে এখানে থাকে না, যে বাংলার ভাষা বোঝে না, কৃষ্টি-সংস্কৃতি জানে না, দু’হাজার কিলোমিটার দূরে থাকে, সে আপনাকে গ্যারান্টি দেবে?’’ এর পরে তিনি যোগ করেন, ‘‘কীর্তি আজাদ,শর্মিলা সরকার, শত্রুঘ্ন সিনহাকে নয়, ভোট দেবেন বাংলা-বিরোধীদের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হত শক্ত করার জন্য।’’

বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের গত বারের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের দলত্যাগ, আবার ফিরে আসা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। অভিষেকের দাবি, তাঁর কাছে তৃণমূল কর্মীদের দাবি ছিল, দাদা প্রার্থীটা একটু ভাল করে বেছে দেবেন। তাই পেশায় চিকিৎসক শর্মিলা সরকারকে প্রার্থী করা হয় ওই কেন্দ্রে। কলকাতায় বহু দিনের বাস হলেও ছোটবেলা তাঁর কেটেছে কাটোয়ায়। কিন্তু প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদের সঙ্গে সে ভাবে বর্ধমানের যোগাযোগ নেই। গত বারের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালির বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ হওয়ার যে অভিযোগ ছিল, তা কীর্তির ক্ষেত্রেও খাটে। কীর্তি এ দিন বলেন, ‘‘আমি ছ’মাসের মধ্যে বাংলা শিখে যাব। বাংলার আন্দোলনের সঙ্গে মিশে গিয়েছি।’’

একই সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া নিয়েও বিজেপিকে এ দিন বিঁধেছেন অভিষেক। তাঁর দাবি, তিনি বিজেপিকে মঞ্চে বিতর্কের জন্য ডাকলেও এখনও পর্যন্ত কেউ আসেনি। তাঁর দাবি, একশো দিনের কাজ আর আবাস যোজনার মতো প্রকল্পে গত দু’বছরে একটা পয়সাও দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।

বহিরাগত প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পাল্টা দাবি, “২০২১-এর নির্বাচনের আগে তৃণমূল বাঙালি, বিহারি ভাগ করেছিল। আর তার পর সাকেত গোখলে, সুস্মিতা দেব, সাগরিকা সারদেশাইদের রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। আমি জানতে চাই ইউসুফ পাঠান, কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিন্‌হা কবে বাঙালি হলেন?’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা এ সব কিছুই বলব না। আমাদের কাছে আগে দেশ। কেউ বহিরাগত নন।’’

সভার পরে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বিজেপির এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা নিয়ে বলতে ভুলে যাওয়ার জন্য আক্ষেপ করেন। বিধায়কদের নির্দেশ দেন, বাড়ি বাড়ি যাওয়ার। যে সব ব্লকে সমস্যা আছে সেখানে নির্বাচনী কমিটি গড়ার নির্দেশ দেন। নজর দিতে বলেন বর্ধমান দক্ষিণ ও পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভায়।

এ দিন সিএএ প্রসঙ্গে টালিগঞ্জের যুবকের কাগজ খুঁজে না পেয়ে মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলেন অভিষেক। জুমলার ফাঁদে পা না দিতে বলেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই কথা বলা মানে পশ্চিমবঙ্গের তিন কোটি হিন্দু ও সারা দেশের শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE