অমিত শাহ। — ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর হওয়ার পরে, ভোটের অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। কারা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন, কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, কারা ‘সিএএ’ থেকে ফায়দা তুলবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা। লোকসভা ভোটে যে এর বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। তবে সংখ্যালঘু প্রভাবিত মালদহ জেলার দুটি লোকসভা আসনে তৃণমূল বাড়তি সুবিধা পাবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। মানতে নারাজ বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা।
উত্তর ও দক্ষিণ মালদহ লোকসভা আসনের ফল বররাবরই সংখ্যালঘু ভোটে নির্ধারিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, উত্তর মালদহে ৫৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ মালদহে ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। এই ভোট যখন যার দিকে গিয়েছে, তারাই জয়ের মুখ দেখেছে। এর আগে, বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে তৃণমূল জেলার ১২টি আসনে সে ভাবে দাঁত ফোটাতে পারত না। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে জেলার আটটি আসন তারা দখল করে এবং সেগুলি বেশির ভাগই সংখ্যালঘু প্রভাবিত এলাকাতেই। এমনকি, সংখ্যালঘু প্রভাবিত যে সুজাপুর বিধানসভা এলাকা কয়েক দশক ধরে কংগ্রেসের ‘গড়’ বলে পরিচিত ছিল, সেখানেও লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত হয় কংগ্রেস প্রার্থী! বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, ‘সিএএ’, ‘এনআরসি’-জুজুতেই সে বার সংখ্যালঘু ভোট বেশির ভাগটাই তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছিল। তবে গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল উত্তর মালদহ আসনে দ্বিতীয় স্থানে ও দক্ষিণ মালদহ আসনে তৃতীয় স্থানে ছিল। তৃণমূলের একাংশের দাবি, কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগিতেই ওই পরিস্থিতি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটেও সংখ্যালঘু ভোটের একাংশ তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরায় বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত।
তৃণমূলের সমস্যা হল, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হলে লড়াই তাদের কাছে কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু দেশ জুড়ে ‘সিএএ’ জারি হওয়ায় সে হিসাব পাল্টে যেতে পারে। তৃণমূলের এক বিধায়কের কথায়, “পঞ্চায়েতে যে সংখ্যালঘু ভোট সিপিএম ও কংগ্রেসের দিকে গিয়েছিল, সিএএ-র আতঙ্কে বিজেপিকে রুখতে তা আবার আমাদের দিকেই ফিরবে।” যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব আপাতত সতর্ক ভাবে এগোতে চাইছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সী বলেন, “সিএএ নিয়ে যা বলার, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন। সংগঠন ও মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার উপর ভর করেই দু’টি আসন দখল করব।” বিজেপি নেতাদের একাংশের ধারণা, ‘সিএএ’ কার্যকর হওয়ায় এক দিকে যেমন সংখ্যালঘু ভোট একজোট হবে, আবার হিন্দু ভোটও তাদের ঝুলিতে এসে জড়ো হবে। যদিও দলেই অনেকে এ নিয়ে সহমত নন। বিজেপির মালদহ জেলার সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অঙ্কটা এত সহজ নয়। আমাদের কিছু চিন্তা-ভাবনা আছে। দেখার অনেক কিছু বাকি আছে।” সিপিএম জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বিজেপি মানুষকে সন্ত্রস্ত করে, আতঙ্কিত করে ভোট পেতে চাইছে। বিভাজনের রাজনীতির ফায়দা নিতে চাইছে তৃণমূল। এ সব বিজেপি ও তৃণমূলের বোঝাপড়া। তবে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা থেকে মানুষ তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy