বাইরন বিশ্বাস (বাঁ দিকে)। জাকির হোসেন (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলে যোগ দেওয়া ইস্তক সে ভাবে সক্রিয় নন সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। দলীয় বৈঠকে থাকেন। কিন্তু একের পর এক কর্মসূচিতে তিনি অনুপস্থিত। তার মধ্যে কয়েক মাস অসুস্থ ছিলেন। দীর্ঘ অসুস্থতা কাটিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে আবার সাগরদিঘির ময়দানে নামলেন বাইরন। কিন্তু তিনি সক্রিয় হতেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সাগরদিঘি বিধানসভায় বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূল জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। জাকিরের তৈরি করা নির্বাচনী কমিটি ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নিলেন বাইরন। এই বিতর্ক গড়াতেই কটাক্ষ করল বিরোধীরা। কংগ্রেস বলছে, তৃণমূলের এলাকা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। বিজেপির খোঁচা, ভোটের আগে তৃণমূলে বখরা নিয়ে গন্ডগোল তুঙ্গে উঠেছে।
তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক জাকির হোসেনের সঙ্গে সাগরদিঘির বিধায়কের লড়াই দীর্ঘ দিনের। বস্তুত, বিড়ি ব্যবসায় দু’জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ ছড়িয়েছে রাজনৈতিক ময়দানেও।
নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য সাগরদিঘি বিধানসভায় আলাদা কমিটি ঘোষণা করেন জাকির। আর এ নিয়েই বিধায়কের অনুগামীদের সঙ্গে শুরু হয়েছে তৃণমূলের একাংশের কোন্দল। বাইরন বলেন, ‘‘সাগরদিঘিতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য পৃথক কমিটি, কনভেনার, পর্যবেক্ষকের পদ তৈরি করে নির্বাচনী প্রচার চালানোর কথা বলা হচ্ছে। তবে জেলার অন্য বিধানসভার ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে না।’’ জাকিরের নাম না করে তিনি আরও বলেন, ‘‘জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অন্য এক বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক জোর করে সাগরদিঘিতে তাঁর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছেন। এ সব আমি মানি না।’’ বাইরন সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘বাইরে থেকে কোনও বিধায়ক সাগরদিঘির জন্য জোর করে কোনও কমিটি তৈরি করে দেবে, আর আমরা বসে বসে দেখব, এটা হতে পারে না।’’ পাশাপাশি তৃণমূলের জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী খলিলুর রহমানকে সর্বাধিক ভোটে জয়যুক্ত করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী বিধায়ক বাইরন।
শুধু এখানেই ক্ষান্ত থাকেননি বাইরন। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে যাঁরা খলিলুর রহমানের হয়ে ‘খাটবেন’, তাঁদের নিয়ে কমিটি তৈরি করব। জোর করে বাইরে থেকে কেউ কিছু চাপিয়ে দিলে তা মানব না।’’
খলিলুরের হয়ে সাগরদিঘির বিভিন্ন এলাকায় ভোটের প্রচার এবং সাংগঠনিক বৈঠকও শুরু করে দিয়েছেন বাইরন। শুক্রবারই স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তিনটি বৈঠকে অংশ নেন। অন্য দিকে, এ নিয়ে জাকির বলেন, ‘‘আমি একক সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও কমিটি করিনি। দল যেটা অনুমোদন করেছে, সেটাই হয়েছে। কে মানবে, কে মানবে না সেটা দল দেখবে।’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘ভাগের বখরা নিয়ে টানাটানি হলে তৃণমূলের মধ্যে একটু গুঁতোগুঁতি হয়, এটা আমরা সব জায়গাতেই দেখছি। সাগরদিঘিও তার ব্যতিক্রম নয়।’’ আর জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘বিধায়ক এবং জেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই চলছে। মানুষ কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে বাইরনকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু উনি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে দলবদল করেছেন। এ বারের ভোটেই যোগ্য জবাব পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy