একদিকে চৈত্রেই তীব্র দাবদাহ। সঙ্গে রয়েছে কালবৈশাখীর মতো হঠাৎ ঝড়ের আশঙ্কা। প্রাকৃতিক পরিস্থিতি মাথায় রেখেই প্রচারের রূপরেখা তৈরি করতে হচ্ছে ডান-বাম-রাম— সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের। পাশাপাশি, গরমের মধ্যে ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসনও।
দেশে সাত দফায় লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে। আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফায় রয়েছে কাঁথি এবং তমলুক কেন্দ্রের নির্বাচন। প্রায় দু’মাস পরে ভোট। এই সময়ে চলছে প্রচার। পোড়া চৈত্রের কাঠফাটা রোদ মাথায় নিয়ে এক বিধানসভা থেকে আরেক বিধানসভা ছুটে বেড়াচ্ছেন সব দলের প্রার্থীরা। লক্ষ্য একটাই— মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়ার আগে যত বেশি সম্ভব জনসংযোগ। কিন্তু দিনের বেলা বাড়ালেই ভাটা পড়ছে সেই প্রচারে। সৌজন্য রোদের দাপট। ওই সময়ে ঘরের মধ্যে কর্মী বৈঠক সেরে সব দলেরই প্রার্থীরা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নানা কর্মসূচি করছেন।
কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিকের সমর্থনে খেজুরি বিধানসভা জুড়ে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ছিল মঙ্গলবার। সোমবার দিনভর পটাশপুরের দু’টি ব্লক জুড়ে প্রচার করেন উত্তম। কখনও মন্দিরে পুজো দিয়েছেন, মোটরবাইক র্যালি করেছে, আবার কখনও হেঁটে জনসংযোগ সারছেন তিনি। উত্তম বলছেন, ‘‘সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য একটু বেলা বাড়ার পর জনসংযোগ বন্ধ রাখছি।’’ একই রকম ভাবে বেলা বাড়ার পর জনসংযোগের কর্মসূচি করছেন না তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। তরুণ মুখ দেবাংশু এখনও হেঁটে সেরকম প্রচার করেননি। তবে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী বৈঠক, কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি। মাথায় টুপি, ছাতা, তোয়ালে বা রোদচশমা নেন না তিনি। দেবাংশুর যুক্তি, ‘‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। তাই কিছুই পরি না।’’ তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী প্রচারে এবং খাবারের তালিকায় এসেছে ডাবের জল বা ফল।
রমজান মাস চলছে। ইফতারের জন্য ফলের চাহিদা রয়েছে বাজারে। তবে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্যও ভাল পরিমাণ ফল কেনা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। যেখানে কর্মী বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে, সেই সব এলাকায় শশা, তরমুজ, শাকালুর দোকানও বসতে দেখা গিয়েছে। দোকানদারেরাও জানাচ্ছেন, সাময়িক জল তেষ্টা মেটাতে রসাল ফল কিনছেন প্রায় সকলেই।
প্রার্থীরা যেমন গরমে স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে প্রচার সারছেন, তেমন গরমের সঙ্গে যুঝতে পুলিশ এবং প্রশাসনকেও নানা পন্থা অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে। সরকারি আধিকারিকেরা সেভাবে প্রকাশ্যে কর্মসূচি করছেন না। আর জেলায় আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চে পুলিশের আধিকারিক এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা চোখে চাপাচ্ছেন রোদ চশমা। এমসিসি কর্মীরা (মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট) গাড়িতে চেপে এলাকায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা না করা হলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাপদাহ এড়াতে সব রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy